রোজদিন ডেস্ক :- আজ সকালেই রাজভবন এর তরফ থেকে জানানো হয় যে রাজ্যপাল এর বিরুদ্ধে যে শ্লীলতাহানির মিথ্যে অভিযোগটি ওঠে সেটির প্রমাণ স্বরূপ রাজভবনের ভিডিও ফুটেজ দেখানো হবে।সেই মতো ঘটনার দিনের ফুটেজ দেখানো হল রাজভবনের তরফে।
৫.৩২ মিনিট থেকে ৬.৪১ মিনিট পর্যন্ত ফুটেজ দেখাল রাজভবন। রাজভবনের মেন গেট ও নর্থ গেটের ক্যামেরার ছবি প্রকাশ্যে আনল রাজভবন। ফুটেজে দেখা যাচ্ছে ৫.৩২ মিনিটে অভিযোগকারিণী যাচ্ছেন পুলিশের একটি রুমে। পরে ৫.৪০ মিনিট নাগাদ পাশের একটি রুমে যাচ্ছেন অভিযোগকারিণী। রাজভবনের ভিতরের কোনও ফুটেজ দেখানো নি।
বৃহস্পতিবার এই দু’টি ফুটেজ প্রকাশ্যে আনবে বলে রাজভবন জানিয়ে দিয়েছিল। ঘটনার দিন প্রচুর পুলিশ ছিল রাজভবনে। কারণ ওই দিন রাতেই রাজভবনে এসে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অভিযোগকারিণী দু’সপ্তাহে দু’বার শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলেন, যার প্রেক্ষিতে রাজভবনের ফুটেজ দেখতে চায় লালবাজার পুলিশ। কিন্তু রাজ্যপাল সিভি আনন্দ জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা রাজ্য পুলিশকে সিসিটিভি ফুটেজ দেওয়া হবে না। বরং ইমেলে যাঁরা যোগাযোগ করবেন, তাঁদের ফুটেজ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। সেই মতোই এদিন ১ ঘণ্টা ৯ মিনিটের ওই ফুটেজ প্রকাশ করা হয়।
এদিন যে CCTV ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছ, তাতে শুধুমাত্র অভিযোগকারিণীর গতিবিধিই চোখে পড়েছে। দু’টি CC ক্যামেরার ফুটেজই সামনে আনা হয়েছে। একটি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, হন্তদন্ত হয়ে ওই তরুণী প্রথমে রাজভবনের OC-র ঘরে যাচ্ছেন, সেখান থেকে বেরিয়ে আবার অ্যাডিশনাল OC-র ঘরে ঢুকছেন। তবে যে কনফারেন্স রুমে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন ওই তরুণী সেখানকার ফুটেজ দেখা যায়নি এদিন। করিডরের ফুটেজও দেখানো হয়নি।
তবে অভিযোগকারিণী যে অভিযোগ করেছেন, যে দু’দিন তাঁর শ্লীলতাহানি করেছেন রাজ্যপাল, রাজভবনের যে ঘরে তাঁকে ডাকা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন, সেখানকার কোনও CCTV ফুটেজ সামনে আনেননি রাজভবন। সেখানে আদৌ কোনও CCTV রয়েছে কি না, তাও জানা যায়নি এখনও পর্যন্ত। দু’দিন যে নির্দিষ্ট সময়ে শ্লীলতাহানি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ওই তরুণী, সেই সময়কার কোনও ফুটেজও সামনে আসেনি।
এই ফুটেজ নিয়ে মুখ খুলেছেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, “রাজ্যপাল রাজ্যের পালনকর্তা। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন এক মহিলা। আর উনি বলছেন, ‘দেখো বাবু, আমি কত ভাল, কিছুই করিনি…”
প্রথমে বলেছিলেন কাউকে ফুটেজ দেখাবেন না। পরে বললেন প্রথম ১০০ জন আবেদনকারীকে ফুটেজ দেখানো হবে। রাজ্যের ১১ কোটি মানুষের মধ্যে ১০০ জনকে। কিন্তু যে ফুটেজ দেখালেন, তা দেখিয়ে কী হল, বোধগম্য হল না। যা দেখা গিয়েছে, তা তো তরুণী আগেই জানিয়েছেন।” যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। এই বিতর্কে অংশ নিতে চান না বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাজ্যপালের ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী কিছু বিধি নিষেধ বা রক্ষা কবজ আছে। যার দরুন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে পারেনি কলকাতা পুলিশ। তবে লালবাজারের তরফে রাজভবনের CCTV ফুটেজ চাওয়া হয়। কিন্তু পুলিশ এবং আদালতের তদন্তের এক্তিয়ার নেই বলে জানান রাজ্যপাল। পুলিশ বা মমতা সরকারকে নয়, সাধারণ মানুষে ইমেলে আবেদন করলে ফুটেজ দেওয়া হবে বলে জানান। রাজভবনের কর্মীদের পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সাজানো, ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল।
Be the first to comment