জয়দীপ মৈত্র : নামের ফলক জ্বলজ্বল করছে। কিন্তু মূর্তির দেখা নেই। মাঝে কেটে গিয়েছে সাতটা বছর। আজও জেলা ক্রীড়া সংস্থার ভেতরে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীর মূর্তি বসানো গেল না। যার জেরে ইতিমধ্যেই আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন স্বয়ং ক্রিকেটের মহারাজ সৌরভ। মহারাজা বলেছেন, ‘বালুরঘাটে যদি সেই মূর্তি বসানোর জায়গা না থাকে। আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হোক।’ যা ভীষণ লজ্জাজনক মনে করছেন তরুণ প্রজন্মের ক্রিকেটাররা। তারা চাইছেন খুব দ্রুত এখানে দাদার আট ফুট লম্বা সেই মূর্তি বসানো হোক।
বালুরঘাটের ক্রিকেটার রাজা সিং বলেন, ‘সৌরভ গাঙ্গুলী আমাদের আইকন। যার বিশ্ব দরবারে খ্যাতি। বালুরঘাটে এসে নিজের মূর্তি উন্মোচন করেছেন। তাকে সম্মান জানাতেই মূর্তি বসানো হোক। তিনি এখন রাজ্যের এম্বাসেডরও বটে। মাঠে গেলেই সেই জায়গাটা ফাঁকা দেখি। এটা লজ্জাজনক।’ ১৫ জুলাই ২০১৭ সালে বালুরঘাট স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে নিজের মূর্তি উন্মোচন করেছিলেন লিভিং লিজেন্ড সৌরভ গাঙ্গুলি। স্টেডিয়ামের বিকাশ ময়দানের মূল গেটের সামনে তার পূর্ণাবয়ব মূর্তি বসানোর কথা ছিল। কিন্তু ‘দাদা’র মূর্তি বসানোর জন্য জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাছে কোনও অনুমতি ছিল না। তার জেরেই শুরু হয় আইনি জটিলতা। ফলে মূর্তি স্থাপনের শিকেয় ওঠে। অনুষ্ঠান মঞ্চের পাশেই অস্থায়ীভাবে রাখা হয়েছিল মূর্তিটি। সেটাই উন্মোচন করে যান সৌরভ। এরপরই রাজ্যজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।গোটা বিষয় নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়াও। পরে জানা যায়, আট ফুটের মূর্তিটিকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট বিভাগের অফিসে রাখা হয়েছে। দীর্ষ সাত বছর ধরে ওই অফিস ঘরেই রয়েছে মূর্তিটি। এমনকি মূর্তি রাখার জন্য যে বেদীটি বানানো হয়েছিল। সেটিও কার্যত ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। কিন্তু এখনও তা নিয়ে গড়িমসি। মূর্তি বসানো নিয়ে দায় ঠেলাঠেলি অব্যাহত। জেলা ক্রীড়া সংস্থা প্রশাসনের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। প্রশাসন জানাচ্ছে, এখানে তাদের কোনও হাত নেই।
সিএবি জেলা কমিটির চেয়ারম্যান তথা সৌরভ গাঙ্গুলী ফাউন্ডেশনের কর্ণধার গৌতম গোস্বামী জানান, ‘সৌরভ গাঙ্গুলী তার মূর্তি উন্মোচন করার পরে তা সেখানে বসানো হয়নি। তিনি জেনে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। দাদা বলেছেন, “যদি সেখানে জায়গা না হয়, আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দাও।” যা জেলাবাসীর কাছে ভীষণ লজ্জার। বালুরঘাটের সৌরভ গাঙ্গুলীর মূর্তি আজ বা কাল বসবেই। তবে সেই মূর্তি ও জায়গা আর নয়।’ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক অমিতাভ ঘোষ বলেন, ‘এটা সরকারি জায়গা ও বিষয়। আমরা কিছু জানি না। প্রশাসনের তরফে সেখানে মূর্তি বসানোর স্থগিতাদেশের নির্দেশ পালন করছি। মূর্তিটি যে অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থাতেই পড়ে আছে। প্রশাসনের তরফে নির্দেশ আসলে আমরা বৈঠক করে উদ্যোগী হব।’ মূর্তি বসানোর দায় জেলা প্রশাসনের না বলে সাফ জানিয়েছেন জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণা। তার কথায়, ‘আমাদের বিষয়টি জানা নেই। এখানে আমাদের কোনও ভূমিকা নেই। জেলা ক্রীড়া সংস্থা নিজের জায়গায় মূর্তি বসাবে। সেখানে প্রশাসনের অনুমতির দরকার নেই।’
Be the first to comment