অমৃতা ঘোষ:-
নবান্ন অভিযানের পর বুধবার ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধ ডেকেছে বিজেপি। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে গতকালই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, কোনও রকমের বনধ তাঁরা মানবেন না। বাংলা স্বাভাবিক রাখার আর্জিই জানানো হয়। কিন্তু বুধের সকাল থেকে রাজ্যের একাধিক জায়গায় উত্তেজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় ইতিমধ্যে পুলিশের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছেন বিজেপি নেতারা। বালুরঘাটে এক বিজেপি নেতা গ্রেফতারও হয়েছেন বলে খবর।
কলকাতা শহর ছাড়া বিভিন্ন জেলায় ‘রেল রোকো’ কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। তার জেরেই সকাল থেকে উত্তেজনা। কারণ বনধ না মেনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পথে নেমেছে তৃণমূলও।
কোচবিহার, ব্যান্ডেল, হাওড়া সহ একাধিক এলাকায় স্থানীয় স্টেশনে নেমে লোকাল ট্রেন আটকাচ্ছে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। বনগাঁ, মুর্শিদাবাদেও ধরা পড়েছে একই ছবি। ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত তো হচ্ছেই, পাশাপাশি রাস্তায় অবস্থান করার জন্য বাস, অটো পরিষেবাও স্বাভাবিক নয় বহু জায়গায়।
কোচবিহারে বনধ পালন করতে গিয়ে আটক হয়েছেন দুই বিজেপি বিধায়ক, এমন খবরও মিলেছে। এ দিন সকালে কোচবিহারে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহনের নতুন বাসস্ট্যান্ডের সামনে বিক্ষোভ অবস্থানে বসেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। সেখানেই পুলিশের সঙ্গে বচসা হয় তাঁদের। পরে দুজনকে আটক করা হয়েছে।
শিয়ালদহের দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়েছে। লক্ষ্মীকান্তপুর লাইনের একাধিক স্টেশনে ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলেছে বনধ সমর্থকেরা। যার জেরে রেলের ওভারহেড তারের বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যাহত। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিয়ালদহ থেকে লক্ষ্মীকান্তপুর, কাকদ্বীপ, নামখানাগামী ট্রেন চলাচল বন্ধ। ট্রেন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় সকাল থেকেই ওই লাইনের একাধিক স্টেশনে দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন যাত্রীরা। ট্রেন না পেয়ে অনেকেই সড়কপথে রওনা দিয়েছেন নিজেদের গন্তব্যের উদ্দেশে।
বনধ সফল করার জন্য অনেক বিজেপি নেতা নেত্রী সকাল থেকেই তাদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন পথে নেমে। কোনো কোনো জায়গায় দোকান পাঠ খোলা থাকলেও জোড় করে তা বন্ধ করিয়ে দেওয়ার হুমকিও আসছে। যেখানে গতকালই নবান্নের কড়া নির্দেশ ছিল আজ কোনো রকম বাংলা বনধ সচল থাকবে না। কিন্তু জায়গায় জায়গায় দুর্ভোগ অশান্তি সৃষ্টি করা হয় বনধ সফল রাখতে।
ইতিমধ্যে কিছু কিছু জায়গায় বিজেপি নেতা নেত্রী দের আটক করা হয়েছে।
বনধের সমর্থনে কোলে মার্কেটে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ। কিন্তু, সেখানে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ ছড়ায়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। যদিও প্রথমে তাঁকে শান্তিপূর্ণভাবেই বনধের সমর্থনে নামতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু, কোলে মার্কেটে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার কিছু পর তিনি বাড়ি আসেন। সেই সময়ই তাঁর বাড়ি ঘিরে ফেলে পুলিশ। আশঙ্কা তখনই করা হচ্ছিল। শেষমেশ এলাকায় অশান্তি তৈরির চেষ্টার অভিযোগে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
এছাড়া আটক করা হয় বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় কেও।
বাংলা বনধ সফল করতে রাস্তায় নেমেছেন বিজেপি নেত্রী রূপা গাঙ্গুলি। এদিন গো ব্যাক স্লোগান দেওয়া হয় রূপাকে । এদিন তিনি বলেন, ‘আমরা রাজ্যের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। মহিলা পুলিশকে তিনি বলেন, ম্যাডাম আমরা কিছু করিনি। আমরা কি ভাঙচুর করতে এসেছি ? এটা আমার রাজ্য। এই রাজ্যে আমি বড় হয়েছি। আমি আপনাদের হাতজোড় করে অনুরোধ করছি মারধর করবেন না। তৃণমূলের মানুষরা যদি নিজেদের মানুষ নয় বলে প্রমাণ করতে চায়, আমার কিছু করার নেই।’ এরপরেই আটক করা হয় রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে।
Be the first to comment