নারকেলডাঙায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১৩ বছরের কিশোরের মৃত্যুর জন্য বাতিস্তম্ভ থেকে বিদ্যুৎ চুরিই কি দায়ী? শনিবার জমা জলে পা পিছলে পড়ে যাওয়ার সময় একটি বিদ্যুতের খুঁটি ছুঁয়ে ফেলেছিল অষ্টম শ্রেনির ছাত্র ফরজান৷ তারপরই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে৷ পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা ফরজানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ কিশোরের মৃত্যুর পর শনিবার ঘটনাস্থলে যান পুরসভার আলো বিভাগের কর্তারা৷ প্রথমে তাঁদের দেখে বিক্ষোভ দেখান এলাকার মানুষ৷ যদিও পুলিস উপস্থিত থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি৷ যে বিদ্যুতের খুঁটি থেকে বিপদ ঘটেছে সেটি খতিয়ে দেখেন পুরকর্তারা৷ তাঁরা দেখেন, খুঁটির গায়ে অনেক তার জড়িয়ে রয়েছে৷
সবকিছু তদারকির পর পুর কর্তাদের দাবি, ওই এলাকায় হুকিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন মিটার থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হচ্ছে৷ তার জেরে ওই বিপত্তি ঘটেছে৷ যদিও স্থানীয়দের দাবি, যে বাতিস্তম্ভ থেকে দুর্ঘটনাটি ঘটে সেটি চারবছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে৷ অথচ বাতিস্তম্ভের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি৷ বাতিস্তম্ভটি সরানোর জন্য পুরসভাকে বারবার বলা হলেও তারা সেটা করেনি৷ সময়মতো কাজটা করলে ফরজানকে এভাবে অকালে চলে যেতে হত না বলে মনে করছেন এলাকার মানুষ৷
এর আগে হরিদেবপুরে জলমগ্ন বাতিস্তম্ভে হাত লেগে মৃত্যু হয়েছিল ১৪ বছরের এক কিশোরের৷ একই ঘটনা ঘটে শনিবার রাজাবাজার নারকেলডাঙাতে৷ টিউশন থেকে বাবার সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে৷ ফরজানের বাবা ফাকরুদ্দিন দুবাইয়ে গাড়ি মেকানিকের কাজ করেন৷ ছেলেকে বাঁচাতে তিনি কাছে চলে যান৷ কিন্তু বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে তাঁকে আটকে দেন স্থানীয়রা৷ পরে এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার পর ফরজানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা৷
কিশোরের মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস৷ তিনি বলেন, ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক৷ কার গাফিলতিতে মৃত্যু হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ সিইএসসিকে জানানো হয়েছে৷ খুব তাড়াতাড়ি সিইএসসি এবং কলকাতা পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসা হবে৷ তবে ফরজানের মৃত্যুর পর ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এক্ষেত্রে দায় যেমন এলাকাবাসীও এড়াতে পারে না, তেমনই বিদ্যুতের বেআইনি ব্যবহার রুখতে পুরসভার আরও সক্রিয় থাকা দরকার৷
Be the first to comment