
রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- টানা ৪৫ দিন পর মহাকুম্ভ শেষ হল ২৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার, মহা শিবরাত্রির দিন। এই ৪৫ দিন ধরে ৬৬ কোটিরও বেশি মানুষ এই মহাকুম্ভে এসে ত্রিবেণী সঙ্গমে পুণ্য স্নান করেছেন বলেই জানা গিয়েছে। বুধবার প্রয়াগরাজে ত্রিবেণী সঙ্গমে শিবরাত্রির দিনও প্রচুর মানুষ কিন্তু স্নান সেরেছেন।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবারের মহাকুম্ভকে ‘বিশ্ব ইতিহাসে অভূতপূর্ব’ ও সত্যিই অবিস্মরণীয়’ বলেছেন। অসংখ্য ভক্ত, সাধু ও কল্পবাসীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন যোগী। তিনি বলেন, ভক্তরা সঙ্গমে পবিত্র ডুব দিয়ে সারা বিশ্বকে জাতীয় ঐক্য ও জাতীয়তাবাদের প্রতি নিবেদনের বার্তা দিয়েছেন। তাঁর মতে, তাদের জন্যই এই মহাকুম্ভ ঐশ্বরিক ও আরও বেশি ঐতিহ্যময় হয়ে উঠেছে।
মহাকুম্ভে ছয়টি দিনের পুণ্য স্নান অত্যন্ত বিশেষ ছিল। সেইদিনগুলি হল ১৩ জানুয়ারি পৌষ পূর্ণিমা, ১৪ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তি, ২৯ জানুয়ারি মৌনী অমাবস্যা, ৩ ফেব্রুয়ারি বসন্ত পঞ্চমী, ১২ ফেব্রুয়ারি মাঘী পূর্ণিমা ও ২৬ ফেব্রুয়ারি মহাশিবরাত্রি । সেই সঙ্গে তিন রাজকীয় স্নানও কিন্তু অত্যন্ত বিশেষ ছিল। তাছাড়াও সব মিলিয়ে ভক্তদের উপর মোট ১২০ কুইন্ট্যাল গোলাপের পাপড়ির বর্ষণ করা হয়। মহাকুম্ভ মেলার শেষে কিছু বিস্ময়কর তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, যা দেখে অবাক হবেন আপনি।
চলতি বছর পরিবেশ রক্ষা ও পরিচ্ছন্নতার দিকেও বিশেষ নজর রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মহাকুম্ভে এবার গঙ্গা পরিষ্কার এবার রেকর্ড তৈরি করেছে। প্রয়াগরাজে ৩৬০ জনেরও বেশি সাফাই কর্মী বিভিন্ন ঘাটে গঙ্গা পরিষ্কারের জন্য ছিলেন।
মহাকুম্ভ মেলার দীর্ঘতম হাতে ছাপানো চিত্রকলার রেকর্ডে গড়েছে। ২০১৯ সালের কুম্ভ মেলাকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। ২০১৯ সালে ছিল ৭ হাজার ৬৬০, তা এই বছর হয়েছে ১০ হাজার। যা এবার এক নতুন রেকর্ড গড়েছে।
এই মহাকুম্ভ অনুষ্ঠানে পরিবেশবান্ধব রঙ ব্যবহার করা হয়েছে। এই মেলায় প্রচুর মানুষ এসেছিলেন। শিল্পীদের এই মহাকুম্ভে আসা এক অনন্য ছাপ রেখে গেছে। এমনটাই জানালেন যুগ্ম ম্যাজিস্ট্রেট রাজাপল্লী জগৎ সাই।
উত্তরপ্রদেশের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী এ. কে. শর্মা বলেন, মহাকুম্ভ বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাফাই কর্মীদের তিনি অনেক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এবং তিনি তাঁদের প্রকৃত নায়ক বলে অভিহিত করেছেন। তার মতে, মহাকুম্ভ মেলার প্রাঙ্গন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য যারা দিনরাত পরিশ্রম করেছেন।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, মহাকুম্ভে যাওয়ার জন্য এই বছর ১৬ হাজারেরও বেশি ট্রেন দেওয়া হয়েছিল। যা পাঁচ কোটির বেশি ভক্তকে মহাকুম্ভে যাওয়ার সুবিধা করে দিয়েছে।
মহাকুম্ভ মেলায় ১.২৫ কোটি বেশি ভক্তদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শুনলে অবাক হবেন, ৫০ লক্ষের বেশি বিদেশী ভক্ত এই প্রয়াগরাজে এসেছেন এবং প্রয়াগরাজে পবিত্র গঙ্গা স্নান সেরেছেন। এই বছর মহাকুম্ভে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া-সহ অনেক দেশের মানুষ এসেছিলেন।
Be the first to comment