বৃহষ্পতিবার আদালতের রায়ে খুশী ডিএমকে দলের নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে কর্মী-সমর্থকরা। রায় ঘোষনার পরই আনন্দ, উৎসবে মেতে ওঠে তাঁরা। পাশাপাশি দীঘ দিন ধরে চলা টুজি স্পেকট্রাম কেসের রায় ঘোষনা হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পেলো কংগ্রেস। এদিন দলের নেতা মন্ত্রীরাও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে উগরে দিলেন একরাশ ক্ষোভ।
এবার একনজরে দেখে নেওয়া যাক রায় ঘোষনা হওয়ার পর কে কী বললেনঃ
· বিচার ব্যবস্থা জিতেছে। বিরোধী দল মিডিয়ার সাহায্য নিয়ে আমাদের এই কেসে দোষীসাব্যস্ত করতে প্রানপন চেষ্টা চালিয়ে গেছে। কিন্তু সবকিছুই এদিন মিথ্যে প্রমানিত হলো, এমনটাই বললেন ডিএমকে দলের কার্যকরী সভাপতি এম.কে.স্ট্যালিন।
· আমরা অত্যন্ত খুশী যে ন্যায়ের জয় হলো। আজ দিনটা ডিএমকে পরিবারের কাছে অত্যন্ত বড় দিন। আমরা যেসমস্ত মিথ্যা এবং সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি তার বিরুদ্ধে এ যেন এক যোগ্য জবাব। আদালতের রায় ঘোষনার পর এমন কথাই জানালেন দোষীসাব্যস্ত হওয়া কানিমোঝি।
· শুরু থেকেই তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন, তাঁরা বেকসুর খালাস পাবেন, রায়দানের পর সাংবাদিকদের একথাই জানালেন এ.রাজা
· প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং জানান, আদালতের রায়কে সম্মান জানাই। আমি অত্যন্ত খুশী যে আদালত জানিয়েছে ইউপিএর বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারের কোনও ভিত্তি নেই। সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয়েছিল।
· প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি.চিদম্বরম জানিয়েছেন, ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে টুজি কেলেঙ্কারীর অভিযোগ যে ভিত্তিহীন, এই রায়েই তা প্রমানিত হয়ে গেলো।
· আজ আমার কথা প্রমানিত হলো। কোনও দূর্নীতি নয়, কোনও লোকসান নয়। এই কেলেঙ্কারী মিথ্যের কেলেঙ্কারী ছাড়া আর কিছুই নয়। এটা অর্থনীতিবিদ বিকাশ আর বিনোদ রাইয়ের মিথ্যা একটা চাল। এই ঘটনার জন্য জনগনের কাছে বিনোদ রাইকে মাফ চাওয়ার কথাও বলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কপিল সিব্বল। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এটা সর্বসমক্ষে স্বীকার করতে হবে যে এটা তাদের মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।
· সমাজকর্মী আন্না হাজারে বলেন, যদি সরকারের কাছে যথোপযুক্ত প্রমান থাকে, তাহলে তাঁরা বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে যেতে পারেন।
· আদালত চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে নির্দোষদের মিথ্যাভাবে দোষীসাব্যস্ত করা হয়েছিল। বিচার প্রক্রিয়া সঠিক পথেই এগিয়েছে বলে মতপ্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর।
এদিকে, এদিন রায় ঘোষিত হওয়ার পর সরকারের পক্ষেই সায় দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুন জেটলি। তিনি জানিয়েছেন্য কংগ্রেস নেতারা আদালতের এই রায়কে অত্যন্ত সম্মানজনক বলে বিবেচনা করে দূর্ণীতিকে সৎ নীতি বলে প্রমান করতে চাইছে। পাশাপাশি এই নীতিকে অত্যন্ত দূর্ণীতিগ্রস্ত ও অপ্রীতিকর বলে কটাক্ষ করেন জেটলি।
বৃহষ্পতিবার, টুজি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি মামলায় অভিযুক্তরা বেকসুর খালাস পেয়েছে। আদালত জানিয়েছে, টুজি স্পেকট্রাম বণ্টনে কোনওরকমের দূর্নীতিই হয়নি। খালাস পাওয়ার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন প্রাক্তন টেলিকমমন্ত্রী এ রাজা এবং ডিএমকে নেত্রী এম কানিমোঝি। দীর্ঘ ৬ বছর পর মিললো সমাধান। প্রসঙ্গত, প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী এ রাজার বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে সেলফোন নেটওয়ার্কগুলিকে এয়ারওয়েভ ও ভুঁয়ো লাইসেন্স বরাদ্দ করার অভিযোগ ওঠে। অডিট রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর ২০১০ সালে পদত্যাগ করেন রাজা। ২০১১ সালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ওঠে। এরপর প্রায় এক বছর জেল খাটার পর জামিন পান রাজা। এই মামলায় তিনি ছাড়াও মোট ১৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। মামলায় নাম জড়ায় ডিএমকে সুপ্রিমো এম করণানিধির মেয়ে এম কানিমোঝিরও।দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার পর বৃহষ্পতিবার ঘোষিত হলো রায়।বেকসুর খালাস পেলেন সব অভিযুক্তরাই।
Be the first to comment