বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘গুলি করে মারা উচিত’ মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। এমনকি রাজ্য সভাপতির প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন বাবুল সুপ্রিয়। আর মঙ্গলবার সরাসরি আইনের রাস্তায় হাঁটল বাংলার শাসকদল। রাণাঘাট থানায় এফআইআর দায়ের হল মেদিনীপুরের সাংসদের বিরুদ্ধে।
রাণাঘাট শহরের তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে দিলীপের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এমনিতেই নদিয়া পুলিশে মামলা নিয়ে বিজেপি নেতাদের অভিজ্ঞতা ভাল না। কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল মুকুল রায়ের। তারপর দীর্ঘদিন আদালতের নির্দেশে জেলায় ঢুকতে পারেননি মুকুলবাবু। এখন দেখার দিলীপের ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ করে পুলিশ।
অন্যদিকে দিলীপকে কটাক্ষ করে সংশোধনাগারে ঢোকানোর কথা বলেছেন রাজ্যের কারামন্ত্রী উজ্বল বিশ্বাস। তাঁর কথায়, “অবিলম্বে ওঁকে সংশোধনাগারে ঢোকানো উচিত। তারপর সংশোধন করে ওঁকে ফেরত পাঠানো হোক।”
প্রসঙ্গত, রবিবার নদিয়ায় একটি জনসভায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন দিলীপ ঘোষ। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদের নামে গত ডিসেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হয়। বিশেষ করে ট্রেন পোড়ানো হয়, প্ল্যাটফর্মে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তার পরেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় লাঠিচার্জের ও গুলি করার নির্দেশ না দেওয়ার জন্যই তাঁকে নিশানা করেন দিলীপ ঘোষ।
এখানেই থামেননি দিলীপ ঘোষ। মেদিনীপুরের সাংসদ বলেন, “এসব কি তাদের বাপের সম্পত্তি? করদাতাদের টাকায় তৈরি এইসব সরকারি সম্পত্তি তারা নষ্ট করে কী ভাবে!” তিনি বলেন, “এইসব দেশবিরোধীদের উপর গুলি চালিয়ে ঠিক কাজই করেছে উত্তরপ্রদেশ, অসম ও কর্নাটক সরকার। এদের গুলি করাই উচিত।”
‘গুলি’ বক্তৃতা নিয়ে এখনও অনড় মেদিনীপুরের সাংসদ। তাঁর বক্তব্য, তিনি যা বলেছেন তা পার্টির লাইন মেনেই বলেছেন। এ কারণে বাবুলের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন দিলীপ। আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ‘রাজনীতিতে নবাগত’ বলতেও ছাড়েননি। এখন দেখার রাণাঘাট থানা তথা নদিয়া পুলিশ কী পদক্ষেপ করে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে।
Be the first to comment