উস্কানিমূলক মন্তব্য ইস্যুতে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের মামলায় কেন্দ্রকে ৪ সপ্তাহ সময় দিল দিল্লি হাইকোর্ট। উস্কানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে এদিন হাইকোর্টে বাড়তি সময় চান সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।
বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে আদালতে সলিসিটর জেনারেল জানান, বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিচার করে এখনই এফআইআর দায়ের করতে চাইছে না কেন্দ্র। তবে পরিস্থিতি বিচার করে পরে যথা সময়েই এফআইআর দায়ের করা হবে। আর তাই এফআইআর দায়েরের জন্য আদালতে অতিরিক্ত সময় চান সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। কেন্দ্রের আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে এদিন দিল্লি হাইকোর্ট এফআইআর দায়েরের মামলায় কেন্দ্রকে আরও ৪ সপ্তাহ সময় দিয়েছে।
দিল্লিতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আর্জি জানিয়ে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের দ্বারস্থ হন সোনিয়া গান্ধী, মনমোহন সিংরা। দিল্লির হিংসার ঘটনায় কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলে মোদী-শাহদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে নালিশ জানান সনিয়া গান্ধী, মনমোহন সিং, পি চিদম্বরমরা। সংবিধানের রক্ষক হিসেবে দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রপতিকে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ করতেও আর্জি জানিয়েছেন কংগ্রেস প্রতিনিধিরা।
নতুন করে গন্ডগোল না ছড়ালেও বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত দিল্লির সংঘর্ষে মৃত বেড়ে ৩৪। সংঘর্ষে দুশোরও বেশি মানুষ আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতার কারণেই দিল্লির আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ অন্তর্বর্তীকালীন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর। কংগ্রেস সভানেত্রীর অভিযোগ, দিল্লিতে হিংসা ও লুঠে মদত দিচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।
এদিন কেন্দ্রকে দুষে সোনিয়া গান্ধী আরও বলেন, ‘গত ৪ দিন ধরে দিল্লিতে সংঘর্ষ চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ কেন্দ্রীয় সরকার। সংঘর্ষে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুশোরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের রক্ষক। তাঁকে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ করতে অনুরোধ জানিয়েছি।’ একইসঙ্গে এদিনও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেছেন সোনিয়া গান্ধী।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনমোহন সিংও এদিন দিল্লির আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের। তাঁর অভিযোগ, ‘কেন্দ্রের ব্যর্থতার জন্যই দিল্লিতে সংঘর্ষ রোখা যায়নি। রাষ্ট্রপতিকে পরিস্থিতির কথা জানিয়েছি। ওঁকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেছি। সরকারকে রাজধর্ণ স্মরণ করাতে বলেছি রাষ্ট্রপতিকে।’
একইসঙ্গে, দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরলীধরের বদলি নিয়েও এদিন কেন্দ্রকে বিঁধেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। টুইটে বিচারপতির বদলির সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জাজনক বলে লিখেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। দেশের বিচারব্যবস্থার মুখ বন্ধ করতে চাইছে সরকার, এমনই প্রতিক্রিয়া মিলেছে কংগ্রেসের তরফে। যদিও বিচারপতির বদলির বিষয়টি নিয়ম মেনেই হয়েছে বলে এদিন পাল্টা টুইট করেছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ।
Be the first to comment