হাত ছাড়তেই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস৷ এই আবহেই সিন্ধিয়ার সঙ্গে তাঁর ছবি রিটুইট করলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী৷ বুধবার জ্যোতিরাদিত্য বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই ছবিটি রিটুইট করেছেন রাহুল৷
২০১৮ সালে ১২ ডিসেম্বর তিন রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে জয় পেয়েছিল কংগ্রেস৷ ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যে ৭.৫৭ মিনিটে মধ্যপ্রদেশ জয়ের দুই কারিগর কমলনাথ ও জ্যোতিরাদিত্যকে সঙ্গে নিয়ে তোলা একটি ছবি টুইট করেছিলেন রাহুল গান্ধী৷ বুধবার সেই ছবিটিই রিটুইট করেন রাহুল৷
রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ট বৃত্তে ছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া৷ একথা কংগ্রেসের সকলেরই জানা৷ রাহুলের ইচ্ছেতেই ইউপিএ আমলে মন্ত্রী হয়েছিলেন সিন্ধিয়া৷ এমনকি তাঁর ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য হওয়ার নেপথ্যেও সেই রাহুল গান্ধীই ছিলেন৷ কিন্তু যখন জ্যোতিরাদিত্যর দল ছাড়া নিয়ে দলের সবাই আক্রমণাত্মক তখন তাঁর বিরুদ্ধে একটাও শব্দ বলেননি রাহুল৷ উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের মালদহের তৎকালীন সাংসদ মৌসম নূর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর তাঁকে বেইমান বলেছিলেন রাহুল৷
ত্রিপুরার কংগ্রেস নেতা তথা সম্পর্কে জ্যোতিরাদিত্যের ভাই প্রদ্যুৎ মানিক্য এদিন সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে লিখেছেন, জ্যোতিরাদিত্য নাকি তাঁকে মঙ্গলবার রাতে বলেছেন যে, মাসের পর মাস তিনি অপেক্ষা করেছিলেন রাহুলের সঙ্গে দেখা করার জন্য। কিন্তু সাক্ষাৎকারের সময় দেওয়া হয়নি তাঁকে।সেই অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি শুধু বলেছেন, “কংগ্রেসের মধ্যে সম্ভবত জ্যোতিরাদিত্যই একমাত্র নেতা ছিলেন যিনি চাইলে যখন ইচ্ছা আমার বাড়িতে আসতে পারতেন”। এর অতিরিক্ত তিনি আর কিছু বলেননি। তারপরই রাহুলের সেই ছবি পোস্ট যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, অত্যন্ত কাছের জ্যোতিরাদিত্য দল ছাড়ায় আঘাত পেয়েছেন রাহুল৷ তাঁর কাছে জ্যোতিরাদিত্যর জায়গাটা যে কতটা আলাদা সেটা এই রিটুইটেই স্পষ্ট৷
এদিকে মঙ্গলবার থেকেই মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস হাত ধুয়ে পড়ে গিয়েছে জ্যোতিরাদিত্যর পেছনে৷ কংগ্রেসে থেকে তিনি কী কী পেয়েছেন, বা কংগ্রেস তাঁকে কী কী দিয়েছে, সেই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘‘সিন্ধিয়ার ১৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে ১৭ বছর সাংসদ, দু’বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্য সচেতক, কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক, উত্তরপ্রদেশে দলের দায়িত্ব, কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য, ভোটপ্রচারের প্রধান, ৫০টিরও বেশি টিকিট, ৯ জন মন্ত্রী।’’ সরাসরি কিছু না বলা হলেও শেষে শুধু প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘‘এর পরেও মোদী-শাহের আশ্রয়ে?’
আক্রমণের পর্যায়ে গিয়ে কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং বলেছেন, ‘‘উনি অমিত শাহ, নির্মলা সীতারামনের পরিবর্ত হয়ে উঠতে পারেন। ওঁর প্রতিভার বিচার করলে ওঁদের (অমিত শাহ-নির্মলা সীতারামন) চেয়েও ভাল কাজ করতে পারবেন। মোদী-শাহের অভিভাবকত্বে উনি বেড়ে উঠুন। মহারাজ, আমাদের শুভেচ্ছা রইল।’’
Be the first to comment