দীর্ঘ আইনি লড়াই। অবশেষে বিচার পেল নির্ভয়া। সাত বছর পর অবশেষে মিলল বিচার। ফাঁসি কাঠে ঝোলানো হল নৃশংস ধর্ষণের ঘটনায় চার দোষীকে। ঠিক সাড়ে পাঁচটাই কার্যকর করা হয় মৃত্যদন্ড। তিহার জেলের তরফে এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ঠিক সময়েই কার্যকর হয়েছে মৃত্যুদন্ড। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে চারজনের ফাঁসি তিহার জেলের ইতিহাসে প্রথম বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে কোরনা ভাইরাসের আতঙ্ক উপেক্ষা করেই বৃহস্পতিবার রাতে বহু মানুষ ভিড় জমান তিহার জেলের বাইরে। নির্দেশ অমান্য করেই জমে এই ভিড়। যদিও জেলের বাইরে মোতায়েন করা হয়েছিল আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের। ছিল দিল্লি পুলিশের আধিকারিকরা। ঠিক সাড়ে পাঁচটায় চার দোষীর মৃত্যুদন্ডের খবর বাইরে আসতেই হাততালি পড়তে থাকে। কয়েকশ মানুষ একসঙ্গে হাততালি দিতে থাকেন।
পাশাপাশি দেশের বিচার ব্যবস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্লোগানও। এদিন বহু মানুষ প্ল্যাকার্ড, ব্যানার হাতে জেলের বাইরে ভিড় জমান। যার মধ্যে অনেকেই দাবি করেন যে, এমন ভাবেই যেন আগামীদিনে সমস্ত মহিলার উপর হওয়া ঘটনার বিচার হয়। কেউ কেউ আবার দেশের একাধিক আদালতে চলা ধর্ষনের ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেছেন।কাউকে আবার মিষ্টি বিতরণ করতেও দেখা গেল।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকমাস ধরে ফাঁসি নিয়ে চলছিল টানাটানি। একের পর এক তারিখ দিলেও আইনি প্রক্রিয়াতে তা পিছিয়ে যায়। নির্ভইয়া মামলা প্রকাশ্যে এনে দেয় দেশের বিচার ব্যবস্থার ফাঁকফোকরগুলি। প্রশ্ন উঠতে থাকে তাহলে কি বিচার পাবে না নির্ভয়া। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই প্রশ্নটা আরও জরাল হয়। প্রশ্ন উঠতে থাকে তাহলে কি ২০ তারিখও পিছিয়ে যাবে ফাঁসির তারিখ? কিন্তু দেখা যায় আদালত সমস্ত দোষীদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। কিছুটা হলেও ফেরে স্বস্তি! কিন্তু ফাঁসির কয়েক ঘন্টা আগে ফের ঘুরে যায় মোড়।
রাতেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় পবনের আইনজীবী। ফাঁসির উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে দায়ের করে মামলা। দীর্ঘ সওয়াল-জবাব চলে। কিন্তু আবেদনকারীরা নতুন কিছু আদালতের কাছে রাখতে পারেনি। ফলে সমস্ত আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয় ফাঁসি হচ্ছেই। আর তা হচ্ছে ঠিক সাড়ে পাঁচটাতেই। জয়ের হাসি নির্ভয়ার মায়ের মুখে। ভিকট্রি সাইন দেখালেন আদালত থেকে বেরিয়ে।
সারা রাত না জেগে মেয়ের বিচার প্রার্থনা করলেন। ঠিক সাড়ে পাঁচটা ফাঁসি কার্যকর হওয়ার খবরটা আসতেই কেঁদে ফেললেন। দেরিতে হলেও মেয়েকে বিচার দিলেন মা। শপথ নিলেন, আগামিদিনে দেশের কোনও নির্ভয়ার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটলে পাশে গিয়ে দাঁড়াবেন। লড়াই করবেন। পরিবারকে সাহস জোগাবেন।
Be the first to comment