পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের ঐতিহাসিক কাটাস রাজ মন্দির চত্বর থেকে হিন্দু দেবতাদের মূর্তির নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করল পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। মন্দির চত্বরের পবিত্র পুকুরের জল শুকিয়ে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে একটি মামলায় গত মঙ্গলবারের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি মিয়া সাকিব নিসার জানতে চেয়েছেন, কর্তৃপক্ষের কাছে কি আদৌ মূর্তিগুলি রয়েছে, নাকি সরানো হয়েছে?
গত মাসে আদালত মন্দিরের পুকুরের জল শুকিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল। মন্দির কমপ্লেক্সের পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টর থাকায় পরিবেশ দূষণের কারণে সরোবরের ভূগর্ভস্থ জলের স্তর কমে যাচ্ছে। পাকিস্তানের সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক মন্দির সংলগ্ন সরোবরের উপর দৃষ্টিপাত করায় কর্মকর্তারা নড়েচড়ে বসেছিলেন।
পাঞ্জাব প্রদেশের প্রাদেশিক সরকার সরোবরের জলের কম হওয়া নিয়ে বেশ কয়েকটি কারণ তুলে ধরে সুপ্রিমকোর্টে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। রিপোর্টের পর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি মিয়া সাকিব নিসার সরকার থেকে একটি প্রতিবেদন চেয়েছিলেন।
রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, মন্দির চত্বরে সিমেন্ট ফ্যাক্টরির নিস্কাশিত বর্জ্য থেকে ভূগর্ভস্থ ভরাট হচ্ছে যার ফলে সরোবরের জল শুকিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও, পর্যাপ্ত জল সরবরাহ ব্যবস্থা না থাকার কারণে আশেপাশের এলাকার প্রায় সকল ঘরবাড়িগুলি এখানে থেকেই জল সংগ্রহ করে। এলাকাটিতে ইউক্যালিপটাস গাছ লাগানোর পরেও সমস্যা কমেনি।
শুনানির সময় বিচারপতি নিসারের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ ওই এলাকার সিমেন্ট কারখানাগুলিকে ধ্বংসাত্মক বলে অভিহিত করেন। মন্দির সংলগ্ন কারখানাগুলির নামও জানতে চায় সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। প্রশ্নের উত্তরে পঞ্জাব সরকারের আইনজীবী মন্দিরগুলির নাম জানান।
কাটাস রাজ মন্দিরটির নাম সংস্কৃত শব্দ কটাক্ষ, যার অর্থ অশ্রু। পৌরাণিক মত অনুসারে, স্ত্রী সতীর মৃত্যুর পর ভগবান শিবের চোখের জল থেকে এই সরোবরটি সৃষ্ট।
বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী ২০০৫-এ পাকিস্তান সফরে এসে কাটাস রাজ মন্দিরে গিয়েছিলেন এবং পাকিস্তান সরকারের সংরক্ষণ কাজের উদ্বোধন করেছিলেন।
Be the first to comment