দেশবাসীকে টিভির সামনে এনে নাটক করবেন না প্লিজ, মোদীকে খোলা চিঠি সোমেন মিত্রের

Spread the love

আপনার কাছে কোনটা অগ্রাধিকার ? থালা বাজানো? মোমবাতি জ্বালানো? নাকি দেশের অর্থনীতি এবং গরিব মানুষকে বাঁচানো? খোলা চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই প্রশ্নগুলিই করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র।

করোনা আতঙ্কে দেশ জুড়ে যে সঙ্কটময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার বিরুদ্ধে সকলকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। গত ২৫ মার্চ দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন তিনি। ঠিক তার ৯ দিনের মাথায় আজ, শুক্রবার ফের দেশবাসীর উদ্দেশে করোনা নিয়ে ভাষণ দিলেন মোদী।

তিনি বলেন, “লকডাউনের আজ নবম দিন। আপনারা যে ভাবে সরকারকে সহযোগিতা করেছেন তা প্রশংসনীয়।” এরপর দেশবাসীর উদ্দেশে করোনা নিয়ে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “৫ এপ্রিল আপনাদের সকলের কাছ থেকে ৯ মিনিট সময় চেয়ে নিচ্ছি। ওই দিন রাত ৯টায় ৯ মিনিটের জন্য সকলে ঘরের আলো নিভিয়ে রাখুন।”

পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “ওই সময় বাড়িতে থেকেই প্রদীপ, মোমবাতি, টর্চ জ্বালান। তাও যদি না হয়, মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালান।” মোদীর এই বক্তব্যকে তীব্র কটাক্ষ করে প্রদেশ সভাপতি লিখেছেন, আগে থেকে পরিকল্পনা না করে লক ডাউন ঘোষণা করলেন। এর আগেই আপনার আগের ভুল সিদ্ধান্ত গুলো ( নোটবন্দি, ত্রুটিপূর্ণ জি এস টি ) দেশের অর্থনীতি কে খাদের কিনারায় নিয়ে এসেছে। আপনার ভাষণে দেশের মানুষ কি ভাবে বাঁচবে তাঁর তো কোন কথা নেই। পরিযায়ী শ্রমিকদের আগেই তাঁদের বাড়ি চলে যেতে বলতে পারতেন। তাহলে আপনার মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে গরিব মানুষগুলোকে বিষ দিয়ে স্নান করাতে হত না।

সোমেন মিত্র আরও লিখেছেন, আপনার কাছে এই গরিব মানুষগুলো তাঁদের বিরুদ্ধে এই অমানবিক কাজের জন্য একটু সহানুভুতি আশা করেছিল। সহানুভুতি পেলো না। যারা মাইলের পর মাইল হেটে বাড়ি ফিরতে গিয়ে রাস্তায় মারা গেলেন তাঁদের পরিবারের উদ্দেশেও কিছু বললেন না। আমরা ভেবেছিলাম আপনি অন্ততঃ ন্যায় প্রকল্পের মত কিছু ঘোষণা করবেন যাতে গরিবমানুষের ব্যাঙ্কের খাতায় সরাসরি অর্থ পৌঁছত। তাও করলেন না। WHO -র পরামর্শ মত আমাদের দেশে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করার পর্যাপ্ত পরীক্ষা হচ্ছে কোথায় ? তার জন্য পরিকাঠামো কোথায় ? আপনি এই বিষয়ে কোন কথা বললেন না। চিকিৎসক এবং এর সঙ্গে যুক্ত মানুষগুলির সুরক্ষার ব্যবস্থা সম্পর্কে আপনি চুপ করে থাকলেন।

বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল পিছু প্রায় ২০ ডলারে নেমেছে। ডিজেলের দাম কমিয়ে কৃষকের কষ্ট লাঘব করার কোন ঘোষণা আপনার ভাষণে ছিল না বলে হতাশ হয়েছি। বাজারে জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস উঠেছে। এই বিষয়েও আপনি চুপ করে থাকলেন। তবে দেশের মানুষের উদ্দেশে আপনি যে বার্ত দিলেন, তা থেকে ভারতবাসী কি পেল? আপনি থালা বাজান আর মোমবাতি জ্বালান তাতে আমাদের কোন আপত্তি নেই কিন্তু দয়া করে দেশের মানুষকে দূরদর্শনের সামনে টেনে নিয়ে এসে আর নাটক করবেন না।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*