করোনার কালবেলা থেকে মুক্তি পেতে গত শুক্রবার ফের জাতির উদ্দেশ্যে ভাষন দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেদিনের ভাষনে তিনি করোনার বিরুদ্ধে ১৩০ কোটির দেশকে একজোটে লড়াই করবার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মারণ এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে দেশবাসী যে বদ্ধপরিকর তা প্রমাণের আহ্ববান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আজ রবিবার রাত ৯টায় ভারতবাসীর প্রতিটি ঘরে ঘরে জ্বলে উঠেছে মোমবাতি, প্রদীপ। এ যেন প্রদীপের নীচের অন্ধকার ঘুচে গিয়ে নতুন সূর্যোদয়ের আহ্বান। কিন্তু দেশের এমন কঠিন সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের এমন আহ্বানকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী দলগুলি। রবিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে মোদীর এই দীপ জ্বালানোর তীব্র বিরোধীতা করেছে কংগ্রেস।
এদিন কংগ্রেসের মুখপাত্র সুস্মিতা দেব বলেন, “কোনও রকম পরিকল্পনা ছাড়াই ২১ দিনের লকডাউন দেশবাসীর পক্ষে কখনই হিতকারক হতে পারে না। শুধুমাত্র মোমবাতি, প্রদীপ জ্বালিয়ে, হাতা খুন্তি বাজিয়ে করোনা বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জেতা যায় না। তিনি আরও বলেন, ” ভারতের মতো গরীব দেশে অসহায় দরিদ্র মানুষদের জন্য আগাম কোনও রকম সুপরিকল্পনা ছাড়াই এই ধরনের লকডাউন পুরোই অর্থহীন। এরফলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নয়, অনাহারেই সাধারণ মানুষের মারা যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হচ্ছে। দেশের এমন পরিস্থিতিতে ডাক্তার, নার্স এবং মেডিকেল স্টাফ যারা করোনা মোকাবিলায় ময়দানে নেমে যুদ্ধ করছেন তাঁদের সুরক্ষায় সরকার বিশেষ কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করছে না। আর যা করা হচ্ছে, তা ভারতের মতো জনবহুল দেশে নগণ্য মাত্র।”
এদিন কংগ্রেস মুখপাত্র আরও বলেন, করোনার মতো মারণ ভাইরাসের সঙ্গে এভাবে লড়ে কখনই সাফল্য লাভ সম্ভব নয়। এরজন্য দরকার সঠিক পরিকল্পনা। যারা এই মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আসল যোদ্ধা, তাঁদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। শুধু তাই নয়, দেশের প্রতিটি প্রান্তে গরীব মানুষ, কর্মহীন শ্রমিক এবং অসহায় মানুষদের খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করা।
সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, দেশে করোনা মোকাবিলায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে ৪০ হাজার ভেন্টিলেটর মেশিনের প্রয়োজন। যদিও তার মধ্যো ২০ হাজার মতো মেশিন অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। শুধু তাই নয়, তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকার শুরুতেই সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এক্ষেত্রে গোড়ায় গলদ থেকেই গিয়েছে। ফলে রোজ যে ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাতে ভারতবাসীর ভবিষ্যৎ কোন দিকে এগোবে তা নিয়েও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন তিনি।
Be the first to comment