প্রখ্যাত স্ন্যাক্স ফার্ম হলদিরাম ভুজিওয়ালার মালিক মহেশ আগরওয়াল প্রয়াত হলেন সিঙ্গাপুরে। শুক্রবার মাঝরাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বেশ কিছুদিন ধরেই লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। তিন মাস ধরে হাসপাতালে তাঁর চিকিত্সা চলছিল। আগামী শনিবার ৫৭-য় পড়ার কথা ছিল হলদিরাম মালিকের।
বর্তমান সংকটজনক পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে সিঙ্গাপুরেই সে দেশের নিয়ম মেনে শেষকৃত্যে রাজি হয় তাঁর পরিবার। সিঙ্গাপুরে হিন্দুমতে শেষকৃত্যের ব্যবস্থা নেই। শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে থাকা স্ত্রী মীনা ও মেয়ে অবনী মহেশের দেহ নিয়ে দেশে ফিরতে তত্পর ছিলেন, কিন্তু তা তাঁদের পক্ষে আর সম্ভব হয়নি।
সিঙ্গাপুরে আটকে পড়া অন্যান্য ভারতীয়দের মতোই অনলাইন ফর্ম ফিলাপ করে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন মহেশের স্ত্রী-কন্যা। মঙ্গলবার থেকে সে দেশে লকডাউন হওয়ার কথা। সেখানে উপস্থিত ভারতীয়দের বলা হয়েছে, একটি বিমানের ব্যবস্থা করা হয়েছে যেটি বুধবার ভোরে দিল্লি ফিরিয়ে আনবে সেখানকার ভারতীয়দের।
সিঙ্গাপুর থেকে অবনী জানিয়েছেন, ‘আমরা বাবাকে বাঁচাতে পারিনি। কলকাতার ব্যবসা হঠাত্ই অনাথ হয়ে পড়েছে। সেটা বাঁচাতে আমাদের ফিরতেই হবে।’ মহেশ আগরওয়ালের এক পুত্র ও তিন কন্যা। তাঁর বড় ছেলে প্রতীক কলকাতাতেই আছেন। বড় মেয়ে আঁচল একজন বৈজ্ঞানিক, সানফ্রান্সিসকোয় স্যানডিস্কে আছেন তিনি। ছোট মেয়ে অন্তরা দুরহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অঙ্ক ও কম্পিউটার সায়ান্স নিয়ে পড়ছেন।
লিভারের জটিল সমস্যার চিকিত্সার জন্য গত জানুয়ারি মাসে সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন হলদিরামের মালিক। লিভার প্রতিস্থাপনের আশ্বাস পেয়েছিল তাঁর পরিবার। অস্ত্রোপচার সফলও হয়। তবে সংক্রমণের কারণে তাঁকে আইসিইউ-তে রাখতে হয়। তাঁর পরিবারকে বলা হয়েছে, যেহেতু সংক্রমণের কারণেই মহেশের মৃত্যু হয়েছে, তাই তাঁর শেষকৃত্যে কোনও ঝুঁকি নেওয়া হবে না। দেহ প্লাস্টিক ব্যাগে মুড়ে ইলেকট্রিক ইনসিনারেটরে নিয়ে যাওয়া হয় দেহ। অবনী বলেছেন, ‘আমরা মানতে বাধ্য হই। তাঁকে এ ভাবে যেতে দেখে খুবই কষ্ট হয়েছে। কিন্তু আমরা অসহায় ছিলাম।’
Be the first to comment