বিশ্ব জুড়ে এখন হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এর চাহিদা৷ এই রাজ্যে কতটা আছে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন তা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আমাদের রাজ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন মজুত রয়েছে৷ করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য যা এখন প্রয়োজন৷ সারা দেশে পাঁচটি সংস্থা এই ওষুধ তৈরি করে৷ এর মধ্যে গুজরাট থেকে তৈরি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন যাবে আমেরিকা৷ আমাদের এখানেও তৈরি হয়৷ ছোট ছোট অনেকে তৈরি করে৷ সুতরাং আমাদের এখানে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার সমস্যা হবে না৷ এছাড়া সারা বিশ্বেই এখন প্লাজমা স্থানান্তর করার চিকিৎসা শুরু হয়েছে৷ অর্থাৎ যারা সেরে উঠেছেন, তাদের প্লাজমা আক্রান্তের শরীরে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ৷ গবেষকরা গবেষণা করেছেন৷
এদিন তিনি আরও বলেন, বাজারে যাব নিয়ম মানব না ,তা হবে না৷ কড়াকড়ি হোক, কিন্তু বাড়াবাড়ি যেন না হয়৷ আমি মনে করি, লকডাউন যদি বাড়ানোও হয়, সেটা যেন মানবিক ভাবে দেখা হয়৷ অনেকেই বলছেন ৪৯ দিন লকডাউন করলে ভাল ফল পাওয়া যায় ৷ এই সময় করোনাকে তাড়ানো আমাদের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা হচ্ছে৷
এদিকে বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাসকে ঠেকাতে ওষুধ খুঁজছে সকলে। কখনও ম্যালেরিয়ার ওষুধ বা উকুনের তা নিয়ে চেষ্টা চলছে জোরদার। তবে এই পরিস্থিতিতে ভারতকে ওষুধের আর্জি জানিয়েছিল বহু প্রতিবেশি দেশ। করোনা ভাইরাস রুখতে তৎপর ভারত। মেডিসিন ক্রাইসিস দেখছে প্রায় অনেক দেশ। আর এই অবস্থায় অনেক প্রতিবেশি দেশ তাকিয়ে আছে ভারতের দিকে। এই পরিস্থিতিতেই মানবিকতার নজির রাখছে ভারত। মঙ্গলবার, ভারতের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, যারা পরিকাঠামোগত দিক থেকে নির্ভরশীল সেইসব প্রতিবেশিদেশগুলিকে সাহায্য করবে ভারত। মোদীর সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্যারাসিটামল-হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনে লাইসেন্স দেবে ভারত সরকার।
শুধু প্রতিবেশি দেশ নয়, জীবনদায়ী এই ওষুধগুলি বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিকে পাঠানো হবে বলেও জানা গিয়েছে। তবে এই তালিকায় রয়েছে, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থাৎ করোনা বিধ্বস্ত দেশগুলি। বিশেষ এই ঘোষণার পাশাপাশি চরম বার্তাও দিয়েছে ভারতের বিদেশমন্ত্রক। এই বিষয়ে কোনও গুজব ছড়ালে এবং এই ইস্যুতে রাজনৈতিক রঙ লাগানোর চেষ্টা করলে তা বরদাস্ত কড়া হবে না।
কিছু গবেষণায় দেখা যাচ্ছে কোনও কোনও রোগী ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনে সুস্থ হয়ে উঠছেন। আর সেই ওষুধ আমেরিকায় যায় ভারত থেকে। সম্প্রতি, সেই ওষুধের রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। প্রবল আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ম্যালেরিয়া প্রতিষেধক ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রফতানিতে ফের ছাড়পত্র দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশে এই ওষুধ পর্যাপ্ত মজুত আছে কি না, তা ভালো করে যাচাই করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাসের কোনও টীকা এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। বিশ্বজুড়ে সেই চেষ্টাই চালাচ্ছেন গবেষকরা। মূলত, ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ডাক্তাররা প্রেসক্রাইব করলেও, দেখা গিয়েছে করোনার চিকিৎসায় আশাপ্রদ ফল দিচ্ছে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন। যার ফলে, করোনায় এই ওষুধ ব্যবহারে সবুজসংকেত মেলে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ট্যুইট বার্তায় দাবি করেন, করোনা মোকাবিলায় মেডিসিনের ইতিহাসে নজির সৃষ্টি করবে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন। ম্যালেরিয়া এই প্রতিষেধক উৎপাদনে বিশ্বের মধ্যে ভারত প্রথম সারিতে। গত ২৫ মার্চ নিঃশব্দে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের রফতানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে কেন্দ্রীয় সরকার। করোনায় সংকটময় পরিস্থিতিতে এই ওষুধের যাতে আকাল না পড়ে, তার জন্যই তড়়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শুধু আমেরিকা নয়, ব্রাজিল সহ আরও অনেক দেশ ভারতের কাছে এই ওষুধ চেয়েছে।
Be the first to comment