নিজামুদ্দিনের অনুমতি যাঁরা দিয়েছিলেন, তাঁরাই আবার সাম্প্রদায়িক কথা বলছেন: মমতা

Spread the love

দিল্লির নিজামুদ্দিনের ঘটনায় এ রাজ্যে ১৭৭ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রেখেছে রাজ্য সরকার। এর মধ্যে ১০৮ জন বিদেশি।” বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এই তথ্য তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখযোগ্যভাবে এদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, “এই অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল বলেই জমায়েত কার্যকরী হয়। যাঁরা এসব করেছেন, তাঁরাই আবার বলে বেড়াচ্ছেন।”

করোনা আবহে নিজামুদ্দিন দরগায় তবলিগি জামাতের সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে সারা দেশ তোলপাড় হচ্ছে। ওই জমায়েত থেকেই একটা বড় অংশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছে, বলে বিতর্ক আছড়ে পড়েছে এই রাজ্যেও। তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ওই অনুষ্ঠানে অনুমতি দানের জন্য এবার সরাসরি তোপ দাগলেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দিলেন, তথ্য আসার ৬ ঘণ্টার মধ্য়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কিন্তু বুধবারের সাংবাদিক বৈঠকে স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই নিজামুদ্দিন ফেরতদের পরিসংখ্যান দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, “নিজামুদ্দিন ফেরত ১০৮ জন বিদেশিকে আমাদের এখানের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তাঁরা কেউ মায়ানমার, কেউ ইন্দোনেশিয়া, কেউ বাংলাদেশের নাগরিক। সঙ্গে বাংলারও ৬৯ জনকেও রাখা হয়েছে। নিউটাউনের হজ হাউসে মোট ১৭৭ কোয়ারেন্টাইনে আছেন। আমাদের স্বাস্থ্য দফতর পুরোটা মনিটর করছে।”

নিজামুদ্দিন নিয়ে যখন দিন ১৫ আগে রাজ্যগুলিকে সতর্ক করেছিলেন কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা তখন সে ব্যাপারে বিবৃতি দিয়েছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছিল ৭৩ জন নিজামুদ্দিনে গেছিলেন বাংলা থেকে। আলাপনবাবু টুইট করে বলেছিলেন, প্রত্যেককে চিহ্নিত করে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। যদিও তার দু’দিন পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন ৫৪ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকি কয়েকজনের খোঁজ পাওয়া গেছে। আশা করব তাঁরা নিজেরাই পুলিশকে জানাবেন।

যদিও হজ হাউসের কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাংলার ৬৯ জনের মধ্যে তাঁরাও আছেন কিনা তা স্পষ্ট করেননি মুখ্যমন্ত্রী। ভারতে সংক্রমণ ছড়াতে নিজামুদ্দিনের জমায়েতের ভূমিকা ঠিক কতটা তা নিয়ে একাধিক পরিসংখ্যান দিয়েছে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, দেশে সংক্রামিতদের ৩০ শতাংশের উৎস নিজামুদ্দিন। তারা আরও বলেছে, এখন ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে ৪.১ দিনে। নিজামুদ্দিনের জমায়েত না হলে সেটা হত ৭.৪ দিনে। অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক সময়ে দ্বিগুণ হচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নিজামুদ্দিন নিয়ে কেউ কেউ সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা বলছেন। মনে রাখবেন মহামারী ধর্ম দেখে হয় না। বন্যা যখন হয় তখন হিন্দু-মুসলমান বিচার করে ঘরে জল ঢোকে না।” নিজামুদ্দিনের জমায়েত নিয়ে ঘুরিয়ে কেন্দ্রের ঘাড়েই দোষ চাপান মমতা। তিনি বলেন, “মনে রাখবেন বিদেশমন্ত্রক আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আমাদের হাতে নেই। ওখানে অনুমতি দিয়েছিল বলেই জমায়েত হয়েছিল। কিন্তু আমরা যখন খবর পেয়েছি তার ছ’ঘণ্টার মধ্যে নিঃশব্দে কাজ সেরেছি।”

পাশাপাশি তারিখ উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “২৪ মার্চ লকডাউন ঘোষণা হয়েছে। নিজামুদ্দিনের জমায়েত ছিল ১৩ মার্চ। তার আগে দিল্লিতে দাঙ্গাও হয়েছে। অনেক ঘটনা ঘটেছে।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*