ফের উত্তপ্ত জম্মু-কাশ্মীর। সোমবার জঙ্গি হামলা হয়েছে কিশ্তওয়ার জেলায়। জঙ্গিদের গুলিতে শহিদ হয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের এক স্পেশ্যাল পুলিশ অফিসার। পুলিশ সূত্রে খবর, কিশ্তওয়ার জেলার দাচান এলাকার তান্দার গ্রামের ভিতর একটি প্রত্যন্ত এলাকায় এই হামলা হয়েছে। কর্তব্যরত স্পেশ্যাল পুলিশ অফিসারদের উপর আচমকাই হামলা করে জঙ্গিরা। প্রকাশ্যেই এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। তাদের গুলিতে গুরুতর জখম হয়েছেন এক এসপিও। শহিদ হয়েছেন আর একজন। অতর্কিতে হামলা হওয়ায় খানিক হতবাক হয়ে যান সকলেই। এদিকে কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ডিউটিতে থাকা জওয়ানদের দুটো রাইফেল নিয়ে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় জঙ্গিরা। আপাতত তাদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে বলে খবর। গোটা এলাকা মুড়ে ফেলা হয়েছে কড়া নিরাপত্তায়।
গত কয়েকদিন বারবার সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষ হয়েছে উপত্যকায়। সেনাবাহিনী। সিআরপিএফ নিরাপত্তারক্ষী, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের অভিযানে বারবার বাধা সৃষ্টি করেছে জঙ্গিরা। গোপন সূত্রে জঙ্গিদের লুকিয়ে থাকা বা অনুপ্রবেশের খবর পাওয়াও আগেভাগেই সতর্ক ছিল নিরাপত্তাবাহিনী। তবে অভিযান শুরু হওয়ার পর প্রায় প্রতিবারই সেনার উপস্থিতি টের পেয়ে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে জঙ্গিরা। পাল্টা জবাব দেন জওয়ানরাও। বারবার সংঘর্ষে দু’পক্ষেরই অনেকে নিহত হয়েছেন।
এইসবের পাশাপাশি করোনা আতঙ্কের মধ্যেও একাধিক বার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তানি সেনা। রবিবার পাক সেনার মর্তার শেলিংয়ের জেরে কুপওয়ারা জেলায় তিনজন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এদিন সকালেই পুঞ্চ এবং কাঠুয়া জেলাতেও একইভাবে গোলা-বারুদ বর্ষণ করে পাকিস্তানি সেনা। বছর ৪৫-এর এক মহিলা গুরুতর আহত হয়েছেন এই হামলায়। শনিবার রাতেও ব্যাপক মর্টান শেলিং হয়েছে বালাকোট এবং মন্ধার সেক্টরে। স্থানীয়দের দাবি বোমা-গোলা-বারুদ বর্ষণ করেছে পাকিস্তানি সেনা। ক্ষতিগ্রস্ত অসংখ্য ঘরবাড়ি।
গত রবিবারেও গুলির লড়াইয়ে উত্তপ্ত হয়েছিল কাশ্মীরের কেরান সেক্টর। পাঁচ জঙ্গিকে খতম করেছিলেন পাঁচ ভারতীয় সেনা জওয়ান। তবে দুর্ধর্ষ সেই অভিসানে শহিদ হয়েছিলেন সেনাবাহিনীর ওই পাঁচ জওয়ানও। ২০১৬ সালের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ইউনিটের পাঁচ জওয়ান সুবেদার সঞ্জীব কুমার, প্যারাট্রুপার বালকিষাণ, প্যারাট্রুপার ছত্রপাল সিং, হাবিলদার দেবেন্দ্র সিং ও প্যারাট্রুপার অমিত কুমার গত শুক্রবার নামেন জঙ্গি-দমন অভিযানে। অপারেশনের নাম দেওয়া হয় ‘রান্দোরি বেহেক’। খতম হয় পাঁচজন জঙ্গি। তাঁদের মধ্যে দু’জন জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা। বাকি তিনজন জইশ-ই-মহম্মদের প্রশিক্ষিত জঙ্গি।
দু’দিন আগে ভারতীয় সেনাবাহিনী একটি ভিডিও প্রকাশ করে দেখিয়েছিল কী ভাবে ড্রোন দিয়ে গোলা ছুড়ে পাক ভূখণ্ডের জঙ্গিঘাঁটি ও গোলাবারুদের গুদাম গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। রবিবার গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হল, শুধু জঙ্গিঘাঁটিই ধ্বংস হয়নি। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রত্যাঘাতে ১৫ জন পাকিস্তানি সেনা ও আট জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে।
Be the first to comment