লকডাউনের সময়ে রাজ্যে রেশন বিলি নিয়ে প্রথম থেকেই নানা অভিযোগ উঠছিল। সময়ে রেশন দোকান খোলা হচ্ছে না থেকে বরাদ্দ সামগ্রী মিলছে না এমন অনেক অভিযোগ তুলছিল বিরোধীরা। এবার রেশন বিলি নিয়ে নিজেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকেও রেশন বিলি নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগের প্রসঙ্গ ওঠে। সূত্রের খবর, বৈঠকে উপস্থিত খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উপরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে খাদ্যসচিব মনোজ আগরওয়ালকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
জানা গিয়েছে, এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে রেশন বিলি নিয়েই আলোচনা হয়। সেই আলোচনার সময়েই জেলা ধরে ধরে পরিস্থিতির খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা অভিযোগের কথা বলে সেসব সংশোধনের নির্দেশ দেন খাদ্যমন্ত্রীকে। সেই সময়েই মুখ্যসচিবকে বলেন, খাদ্যসচিবের কাজে তিনি খুশি নন। অন্য কাউকে এই দায়িত্ব দেওয়া হোক। জানা গিয়েছে নতুন খাদ্য সচিব পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকী।
এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “আগামী ছ’মাস রেশন ফ্রি থাকবে। এনিয়ে জলঘোলা করার কোনও দরকার নেই। সরকার তার সাধ্যমতো সমস্ত উদ্যোগ নিচ্ছে।” এদিন তিনি বলেন, অনেক জায়গায় দোকান ছোট হওয়ায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বেশি মানুষকে রেশন দেওয়া সম্ভব হয়নি। এবার থেকে রেশন দোকানের পরিবর্তে অন্য জায়গাতেও চাল, গম ইত্যাদি বিলি করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা খাদ্য দফতরকে নির্দেশ দিয়েছি, জায়গা চিহ্নিত করে মানুষের একমাসের রেশন একবারে মিটিয়ে দেওয়া হোক।” তিনি আরও বলেন, এবার থেকে রেশনে এক কেজি করে ডালও দেওয়া হবে। তাছাড়া আসন্ন রমজান মাসে ফি বছর যা যা সুবিধা দেওয়া হয় তা বজায় থাকবে।
কিন্তু এর পর থেকে রেশন বিলি নিয়ে নানা অভিযোগ উঠতে থাকে। বিনামূল্যে রেশন না মেলায় বেশ কয়েকটি জেলায় বিক্ষোভ দেখান সাধারণ মানুষ। এসবের সঙ্গে রেশন নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগও ওঠে। কোথাও কোথাও অভিযোগ ওঠে সময়ে রেশন দোকান খোলা হচ্ছে না বলে। রাজনীতির অভিযোগ তো ছিলই। এদিন মুখ্যমন্ত্রী নিজে এসব নিয়ে সরব হওয়ায় রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, বিরোধীদের অভিযোগকেই মান্যতা দিলেন মমতা।
Be the first to comment