গোটা দেশের মধ্যে কোভিডের চিকিৎসা পশ্চিমবঙ্গেই সবথেকে ভাল হচ্ছে বলে শুক্রবার দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংক্রমণ মোকাবিলার ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনার জন্য এদিন নবান্ন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সব জেলার পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলার স্বাস্থ্য অধিকর্তারাও সেখানে ছিলেন। ওই বৈঠক ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচারিতও হয়। দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রী সেখানেই একথা বলছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “এখানে ট্রিটমেন্টে তো কোনও অসুবিধা নেই। সারা ভারতবর্ষের মধ্যে ট্রিটমেন্টে এখন বাংলায় সবচেয়ে ভাল হচ্ছে। সেগুলো কেউ বলে না। কেন বেশি হচ্ছে না তা নিয়ে অনেকের রাগ। মহা মুশকিল। যদি এখানে চার হাজার পাঁচ হাজার হতো তা হলে হয়তো খুশি হতো।”
বস্তুত গত কয়েকদিন ধরে বাংলায় প্রায় সমস্ত বিরোধী দল অভিযোগ করেছে যে পশ্চিমবঙ্গে পর্যাপ্ত সংখ্যায় কোভিড টেস্ট হচ্ছে না। তাদের এও অভিযোগ, রাজ্যে প্রকৃতপক্ষে কতজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে সে কথা গোপন করছে নবান্ন। কোভিড পজিটিভ রোগী মারা গেলেও মৃত্যুর কারণ হিসাব অন্য কিছু দেখানো হচ্ছে। আর তাতে বিপদ বাড়ছে সাধারণ মানুষের। চিকিৎসকের একাংশও ঘরোয়া আলোচনায় বা প্রকাশ্যে এ ব্যাপারে সরব। আবার আইসিএমআর-এর পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা শান্তা দত্ত জানিয়েছেন, কলকাতা স্থিত নাইসেডে সাড়ে ২৭ হাজার পরীক্ষা কিট এসে পড়ে রয়েছে। কিন্তু সরকার সেখানে পরীক্ষার জন্য নমুনা খুব কম পাঠাচ্ছে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, বিভিন্ন মহল থেকে এহেন সমালোচনা সরকারের উপরে চাপ তৈরি করেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। সরকারের অন্দরেও অনেক আমলা মনে করছেন, রাজ্য সরকার কোভিড মোকাবিলার ক্ষেত্রে তথ্য গোপন করছে বলে একশ্রেণির মানুষের মধ্যে ধারনা তৈরি হয়ে গিয়েছে। এবং এহেন পরিস্থিতিতে একবার সেরকম ধারনা তৈরি হলে তা সরকারের প্রতি তাদের আস্থাও দুর্বল করে দিতে পারে।
সার্বিক এই প্রেক্ষাপটেই মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না। ভারতে আর কোথাও যখন লকডাউন হয়নি তখন তিন দিন আগে আমরা লকডাউন করেছিলাম। ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট বন্ধ করা দরকার, দূরপাল্লার ট্রেন বন্ধ করা দরকার সে ব্যাপারে সবার আগে আমরা আওয়াজ তুলেছিলাম।” তিনি আরও বলেন, “আমরা অনেক আগেই জিনিসপত্র অর্ডার করেছিলাম। ফলে দিল্লি আমাদের না দিলেও প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ পিপিই আমাদের ডাক্তার নার্সদের দিতে পেরেছি। অন্য অনেক রাজ্য পারেনি। তার কারণ তারা অনেক লেটে নেমেছে”।
Be the first to comment