করোনা কোপে বন্ধ হয়ে গেল ঠাকুরপুকুর বেসরকারি বিএমআরআই মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল ৷ এক প্রসূতির করোনা আক্রান্তের পরই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ ৷ এক দিকে যখন করোনা মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তখন একের পর এক হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ৷ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে একের পর এক চিকিৎসক- নার্স- স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন ৷ ফলে সংকটের মুখে চিকিৎসা পরিষেবা৷ এমনটাই অনেকে মনে করছেন ৷
যদিও বন্ধ হয়ে যাওয়া হাসপাতালে কিছু নির্দিষ্ট বিভাগ চালু থাকছে ৷ গত বুধবার বেহালা বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের দুটি বিভাগে রোগী ভর্তি বন্ধ হয়ে যায়৷ আজ শুক্রবার ঠাকুরপুকুর BMRI হাসপাতাল (Bangur Medicare Research Institute Hospital Pvt Ltd) বন্ধ করে দেওয়া হল। সূত্রের খবর,সম্প্রতি এক প্রসূতি ভর্তি হয় এই হাসপাতালে। অস্ত্রোপচারের আগে করোনা পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা।
বৃহস্পতিবার রাতে রিপোর্ট আসলে দেখা যায়, প্রসূতি করোনা আক্রান্ত অর্থাৎ তাঁর রিপোর্ট কোভিড-১৯ পজিটিভ। এরপরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা হাসপাতালে। এরপরই ঠাকুরপুকুরের বেসরকারি বিএমআরআই মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ ফলে সমস্যার মুখে বহু রোগী। বেহালা, তারাতলা, সরশুনা, হরিদেবপুর, ঠাকুরপুকুর, জোকা, পৈলান-সহ দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ চূড়ান্ত চিকিৎসাজনিত সমস্যায় পড়তে পারেন৷
এর আগে বেহালা বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে করোনা আতঙ্কের জেরে হাসপাতালের দুটি বিভাগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। হাসপাতালে এক প্রসূতি সন্তান জন্ম দেওয়ার পর জানা যায় তিনি করোনা আক্রান্ত, ফলে ফিমেল সার্জিকাল ওয়ার্ড বা মহিলা শল্য বিভাগ এবং শিশু বিভাগ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তালিকায় রয়েছে যাদবপুর কেপিসি হাসপাতাল৷ এই হাসপাতালে তিন প্রসূতি করোনা আক্রান্ত।
কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে হাসপাতালের ৪০ জনকে। হাসপাতাল সাময়িক বন্ধ রেখে স্যানিটাইজেশন করা হবে। জানা গিয়েছে, যাদবপুর কেপিসি হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগে চিকিৎসাধীন তিন প্রসূতি করোনা আক্রান্ত। বৃহস্পতিবার তাদের রিপোর্ট পজেটিভ আসে।
এরপরই ওই হাসপাতালে করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগ এবং শিশু বিভাগের মোট ৪০ জন চিকিৎসক নার্স স্বাস্থ্যকর্মীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠান হয়েছে। এদের মধ্যে ১২ জনই চিকিৎসক। হাসপাতালের দুটি বিভাগকে আপাতত বন্ধ করে স্যানিটাইজ বা জীবানুমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত দুটি বিভাগে নতুন করে কোনও রোগী ভর্তি নেওয়া হবে না।
তবে যারা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসা চলবে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। আক্রান্ত প্রত্যেকেই সন্তানসম্ভবা ছিলেন। সেই সময় কোনরকম উপসর্গ তাঁদের ছিল না। এদের প্রত্যেকেরই সিজার করে সন্তানের জন্ম হয়। অস্ত্রোপচারের আগে রুটিন চেকআপ করতে গিয়ে চিকিৎসকরা করোনা পরীক্ষা করেন। সেই পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা যায়, তিন প্রসূতিই করোনা পজেটিভ। তবে তাঁদের সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হয়নি। প্রত্যেকেই সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় সন্তানের জন্ম দেন। প্রত্যেকের সন্তানই সুস্থ আছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
Be the first to comment