রেশন দেওয়া সরকারের কাজ, রেশনের খাদ্যসামগ্রীকে দলীয় ত্রাণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Spread the love

লকডাউনের শুরু থেকেই জেলায় জেলায় রেশন ব্যবস্থায় অনিয়মের অভিযোগ উঠছিল। তৃণমূল সূত্রের খবর, শুক্রবার সেই প্রসঙ্গেই দলের নেতাদের কড়া বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, রেশন দেওয়া সরকারের কাজ। কারও যদি ত্রাণ দিতে হয় তা হলে নিজে তার উদ্যোগ নিন। রেশনের খাদ্যসামগ্রীকে দলীয় ত্রাণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলির অভিযোগ ছিল, রেশনের চাল লুঠ করে তা তৃণমূলের পার্টি অফিস থেকে বিলি করছে শাসকদলের নেতাকর্মীরা। তা যে শাসক দল সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করতে পারে সেই আশঙ্কা রয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটেই জেলা সভাপতিদের উদ্দেশে এহেন বার্তা দিদি দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

সূত্রের খবর, জেলা সভাপতিদের উদ্দেশে তৃণমূল নেত্রী এদিন বলেছেন, অধিকাংশ জায়গাতেই রেশন পাচ্ছেন মানুষ। কিন্তু কেন দু’একটা অভিযোগও শুনতে হবে? তা যাতে না হয় এবং গণবন্টন ব্যবস্থায় দলের কেউ যেন নাক না গলায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

রেশনিং ব্যবস্থা নিয়ে যদি কোনও অভিযোগ আসে তাহলে তা সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন দিদি। সেই সঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে নির্দেশ দিয়েছেন একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ করে জেলা সভাপতিদের সঙ্গে সমন্বয় রাখতে।

রেশনে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে লকডাউনের মধ্যেই বঙ্গ রাজনীতিতে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় বলেছিলেন, বিরাট মাপের দুর্নীতি হচ্ছে রাজ্যে। তিনি এও বলেন, রাজ্য সরকার যদি একে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে তাহলে অতীতের সমস্ত দুর্নীতিকে ছাপিয়ে যাবে।

কাকতালীয় ভাবে তারপর থেকেই নড়েচড়ে বসে নবান্ন। সরিয়ে দেওয়া হয় খাদ্যসচিবকে। মনোজ আগরওয়ালকে সরিয়ে খাদ্যসচিবের দায়িত্বে আনা হয় পারভেজ সিদ্দিকিকে। বিজেপি অভিযোগ করে, মহামারীর সময়ে মানুষের মুখের খাবার কেড়ে নিচ্ছে তৃণমূল। সেই আক্রমণের মোকাবিলা করতে সরকারও নেমেছে প্রস্তুত হয়ে। রেশন ডিলারদের মধ্যে কতজনকে শোকজ, সাসপেন্ড ও জরিমানা করা হয়েছে তার পরিসংখ্যান দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।

জানা গিয়েছে, এদিন জেলা সভাপতিদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কানে এলে তক্ষুনি সরকারকে জানাতে হবে। এ কথা বলেও সতর্ক করেছেন যে, বিজেপি বিভিন্ন জায়গায় ভুয়ো খবর ছড়িয়ে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছে। দিদির এও নির্দেশ, যেখানে বিজেপি এসব করছে সেখানে সমাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ছোট ছোট বৈঠকি সভা করে মানুষের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করতে হবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*