লকডাউনের জেরে বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া বাংলার বাসিন্দাদের ফিয়িয়ে আনতে আরও ১০টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। কেরালা, তেলেঙ্গানা, পঞ্জাব, তামিলনাড়ু এবং কর্নাটক থেকে এই ট্রেনগুলি রাজ্য আসবে। মূলত শ্রমিক, পড়ুয়া, রোগী ও তীর্থযাত্রীদের ফিরিয়ে আনার জন্য এই ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শনিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এমনই জানিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, রবিবারই তেলেঙ্গানা থেকে মালদহে এসে পৌঁছাবে একটি বিশেষ ট্রেন।
এছাড়া বৃন্দাবন,মথুরা এবং বারাণসীতে আটকে পড়া তীর্থযাত্রীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়েও রাজ্য সরকারের তরফে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। স্বরাষ্ট্রসচিব এদির আরও বলেছেন, ‘বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওডিশা, অসম, সিকিম প্রভৃতি প্রতিবেশি রাজ্য থেকে অনেকে পায় হেঁটে রাজ্যে চলে আসছেন। বাংলার সীমান্তে পৌঁছালে সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা তাঁদের নিজ নিজ বাড়িতে বাসে করে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। এই জন্য প্রায় ১ হাজার বাসের ব্যবস্থা রাজ্য প্রশাসন করেছে। তবে অনেকেই নিজ ব্যবস্থায় ফিরতে চান। তাঁদের জন্য এন্ট্রি বা এক্সিট অ্যাপ চালু হয়েছে।’
পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যথেষ্ট সাহায্য করছে না বলে অভিযোগ করতে দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। শনিবার সকালে এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠি লেখেন তিনি। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর জন্য রেলের চালানো শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন এই রাজ্যে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি অবিচার করছে বলেও চিঠিতে অভিযোগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার ফলে শ্রমিকদের দুর্দশা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
তৃণমূলের তরফে ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর ক্ষেত্রে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিথ্যা কথা বলছেন বলে ইতোমধ্যেই ট্যুইটারে তোপ দেগেছেন দলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নবান্নের তরফে লকডাউনে আটকে পড়া বাসিন্দাদের ফেরানোর ক্ষেত্রে রাজ্য প্রশাসনের উদ্যোগের সবিস্তার পরিসংখ্যান তুলে ধরা হল। এটিকে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে রাজ্য প্রশাসনের জবাব হিসেবেই দেখছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
Be the first to comment