কৃষকদের সুবিধার্থে আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার পাশাপাশি তিনটি বড়সড় সংস্কারের পথে হাঁটল কেন্দ্রীয় সরকার৷ কৃষকরা যাতে উৎপাদিত ফসলের সঠিক দাম পান, মূলত সেই লক্ষ্যকে মাথায় রেখেই এই সংস্কারগুলির পথে হাঁটছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ এর মধ্যে যেমন অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে বদল আনার ভাবনা রয়েছে, সেরকমই কৃষিজ পণ্য পরিবহণ আইনে বদল আনার ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন৷ এর ফলে গোটা দেশেই উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারবেন কৃষকরা৷ পাশাপাশি ফসল চাষের আগেই যাতে কৃষককে ন্যূনতম দাম ফেরত দেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া যায়, সেই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী৷
এ দিন কৃষি ক্ষেত্রের জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী৷ এই তহবিলের অর্থ খরচ করে মূলত কৃষিজ পণ্য সংরক্ষণের পরিকাঠামো এবং বিদেশে রফতানির সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে৷ পাশাপাশি ক্ষুদ্র খাদ্য পণ্য উৎপাদন শিল্পের জন্যও দশ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজের ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী৷ মৎস্যজাত দ্রব্য, পশুপালনের জন্য বিশেষ তহবিলর ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী৷ মৌমাছি পালন ক্ষেত্রের জন্য ৫০০ কোটির তহবিল ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী৷
এর পাশাপাশি তিনটি প্রশাসনিক এবং আইনি সংস্কারের কথা ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী৷ প্রথমত অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন সংস্কার করার কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী৷ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন সংস্কার করে খাদ্যশস্য, ভোজ্য বীজ, তৈল বীজ, ডাল, পেঁয়াজ এবং আলুকে এই আইনের নিয়ন্ত্রণাধীন রাখা হবে না৷ এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়বে এবং কৃষকদের ফসলের আরও ভাল মূল্য পেতে সাহায্য করবে বলেও দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী৷ জাতীয় বিপর্যয়ের মতো ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে অবশ্য এই পণ্যগুলিকে অত্যাবশ্যকীয় বলেই ঘোষণা করতে পারবে সরকার৷
একই সঙ্গে এ দিন কৃষিজ পণ্য পরিবহণ এবং বিক্রি সংক্রান্ত আইনেও পরিবর্তন আনার কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী৷ এর ফলে এক রাজ্যের কৃষক ফসলের ভাল দাম পেলে তা অন্য রাজ্যেও বিক্রি করতে পারবেন৷ কৃষকরা যাতে ই ট্রেডিং-এর সাহায্যেও ফসল বেচতে পারেন, তার উপরও জোর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী৷
পাশাপাশি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, কৃষকরা চাষ শুরুর সময়ই যাতে তাঁদের ফসলের ন্যূনতম দামের গ্যারান্টি দেওয়া যায়, সেই সুযোগ করে দিতে আইন আনার কথা ভাবছে কেন্দ্র৷ এর ফলে বড় খুচরো বিক্রেতা, অ্যাগ্রিগেটর, রফতানিকারী, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থাগুলির সঙ্গে কৃষকদের সরাসরি যোগাযোগ হবে৷ কৃষিজ ক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগে যাবতীয় আইনি বাধা দূর করা হবে৷ চাষের ঝুঁকি কমিয়ে ন্যূনতম মূল্য নিশ্চিত করাই এর মূল উদ্দেশ্য হবে৷ এর ফলে কৃষককে চাষ সংক্রান্ত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করার পাশাপাশি ফসলের ন্যূনতম দামেরও নিশ্চয়তা দেবে বেসরকারি ক্ষেত্রের বিনিয়োগকারীরা৷
Be the first to comment