অবশেষে কেন্দ্রের ঘোষিত আর্থিক প্যাকেজের হিসাব দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় যে প্যাকেজের অঙ্ক বলেছিলেন, নির্মলার হিসাব তাকেও ছাপিয়ে গেল। রবিবাসরীয় দুপুরে প্রেস কনফারেন্স করে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দাবি করলেন, কেন্দ্রের ঘোষণা করা প্যাকেজের সার্বিক আয়তন হল ২০ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫৩ কোটি টাকা।
এর মধ্যে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে পদক্ষেপ ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে শুধু তারই আয়তন হল, ৮ লক্ষ ১ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা। তা ছাড়া দেশে লকডাউন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে যে গরিব কল্যাণ প্যাকেজের কথা জানিয়েছিল কেন্দ্র, তার হিসাবও এর মধ্যেও ধরা রয়েছে। তার পরিমাণ হল ১ লক্ষ ৯২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
নির্মলা এ কথা দাবি করার আগে থেকেই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা করা প্যাকেজের অঙ্ক নিয়ে বিরোধী দলগুলি তীব্র কটাক্ষ করছেন। সেই সঙ্গে আগাম বলেছেন, এই হিসাবে অনিবার্য ভাবেই গোঁজামিল রয়েছে। এও হল, একটা জুমলা। ঠিক যেভাবে ২০১৪ সালের ভোটের আগে মোদী গোটা দেশে ভোটের প্রচারে বেরিয়ে বলেছেন, বিদেশ থেকে কালো টাকা উদ্ধার করে সবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। এটা সে রকমই। সোশাল মিডিয়ায় এ ব্যাপারে নানা রকম মিমও সোশাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
বস্তুত নির্মলা এ দিন যে হিসাব দেখিয়েছেন, তাতে আজ সহ তাঁর পাঁচ দিনের প্রেস কনফারেন্সে ঘোষণা করা প্রকল্প থেকে কত আর্থিক সুবিধা সরকার দিতে চলেছে তার হিসাব দেখানো হয়েছে। তার মধ্যে ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি শিল্পকে ঋণ দেওয়া, কৃষি ঋণ দেওয়ার মতো সুবিধার কথা যেমন রয়েছে। তেমনই রয়েছে, কয়লা ব্লক, খনিজ সম্পদের ব্লক বিক্রি বা বেসরকারিকরণের উদ্যোগ থেকে সম্ভাব্য যে টাকা আদায় হবে তার অঙ্কও।
এখানেই প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য ঋণের টাকা প্যাকেজ নয়। সেই ঋণ শোধ করতে হবে ছোট উদ্যোগ ও কৃষকদের। তা ছাড়া মন্দার বাজারে সরকারের সম্পদ বিক্রি করার যে প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে তার নেপথ্যেও উদ্দেশ্য রয়েছে। নিজেদের শিল্পপতি বন্ধুদের এই এলোমেলো বাজারে লুটেপুটে খাওয়ার বন্দোবস্ত করে দিচ্ছে মোদী সরকার।
এদিন নির্মলার প্রেস কনফারেন্সে তাঁকে এ প্রশ্ন সরাসরি করা হয়েছে যে, কেন গরিব ও আর্থিক ভাবে অনগ্রসরদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঁচ থেকে সাড়ে হাজার টাকা করে কেন দিল না সরকার? কারণ, বহু অর্থনীতিবিদ এ ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাঁদের মত, ছিল তবেই বাজারে চাহিদা তৈরি হবে। অনিশ্চয়তার মধ্যেও কিছুটা আশার আলো দেখবে মানুষ।
জবাবে নির্মলা বলেন, অনেক রকম পরামর্শই সরকারের সামনে এসেছিল। সরকার সব বিবেচনা করে তবেই একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। নির্মলা আরও বোঝাতে চান, খয়রাতির পথে না গিয়ে সরকার আত্মনির্ভর হতে মানুষকে সাহায্য করছে। যাতে সম্মানের সঙ্গে উপার্জন করে মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতে পারে।
Be the first to comment