করোনা নিয়ে আতঙ্কের শেষ নেই। এরই মধ্যে গুজরাতের এই ঘটনায় আরও ভীতি ঢুকল সবার মনে। প্রকাশ্যে মিলল করোনা রোগির দেহ। তাও আবার বাস স্ট্যান্ডে। আহমেদাবাদের দানিলিমদায় দীর্ঘক্ষণ পড়ে ছিল বছর ৬৭-র ছগন মাকওয়ানার দেহ। তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন বলে খবর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছগনের চিকিৎসা চলছিল আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে। ১০ই মে থেকে ভরতি ছিলেন তিনি। শনিবার রাতে তাঁর দেহ পাওয়া যায় বিআরটিএস বাস স্ট্যান্ডে। পুলিশই এই দেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। তাই অজ্ঞাতপরিচয় দেহ হিসেবে ভিএস হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয় দেহ। তারপর তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি চিঠি ও একটি মোবাইল ফোন। সেখান থেকেই ছগনের পরিবারের খোঁজ পায় পুলিশ। খবর দেওয়া হয় বাড়ির লোককে। চিঠি মারফত জানা যায় ছগন আহমেদাবাদের দানিলিমদার রোহিত পার্ক সোসাইটির বাসিন্দা। প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে সিভিল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ছগন। সেখানেই করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে তাঁর।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছগনের মৃত্যুর খবরে রীতিমত বিস্মিত তাঁরা। কীভাবে তাঁর দেহ বাসস্ট্যান্ডে এল তা ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা। কারণ হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছিল, সেরে উঠছেন ছগন। ইতিমধ্যেই ছগনের বাড়ির লোকজনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে।
১৪ দিন বাড়ির বাইরে না বেরোনোর নির্দেশ দিয়েছে পুরসভা। মৃতের বাড়ির লোকের অভিযোগ, করোনা পজেটিভ শুনে আতঙ্কে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন ছগন। রাস্তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি গোটা ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রাক্তন আইএএস অফিসার জে পি গুপ্তা এই তদন্ত করবেন বলে খবর। দুদিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, দেশে সর্বোচ্চ হারে ছড়াচ্ছে করোনা সংক্রমণ। শেষ ২৪ ঘন্টায় দেশে নতুন করে আক্রান্ত হলেন ৪৯৮৭ জন মানুষ। যা কিনা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বাধিক সংখ্যায় করোনা সংক্রমণ। দেশজুড়ে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ২৭ জন। মোট আক্রান্তের মধ্যে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৭২-এ। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৪ হাজার ১০৯ জন এবং দেশে বর্তমানে অ্যাক্টিভ কেস রয়েছে ৫৩ হাজার ৯৪৬ টি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে এখবর সামনে এসেছে। শেষ ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ১২০ জনের। দেশের মধ্যে এখন পর্যন্ত সর্বাধিক করোনা সংক্রামিত রাজ্য মহারাষ্ট্র। সেখানে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। শনিবার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ১৬০৬ জন মানুষ। যার জেরে মহারাষ্ট্রে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পার করে ফেলেছে ৩০ হাজারের গণ্ডি। দেশের মধ্যে এই রাজ্যেই করোনা সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। শেষ ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ৬৭ জনের।
Be the first to comment