বাংলায় ৩১ মে পর্যন্ত বাড়ছে লকডাউন। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে সোমবার একথাই জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সংক্রমণের তথ্য অনুযায়ী তিনটি জোনে ভাগ করা হবে রাজ্যের কনটেনমেন্ট জোনগুলিকে।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন বুথ ও ওয়ার্ডভিত্তিক কনটেনমেন্ট জোন তৈরি করা হবে। তিনটি জোন যথাক্রমে – এ অর্থাৎ ক্ষতিগ্রস্ত জোন, বি অর্থাৎ বাফার জোন এবং সি অর্থাৎ ক্লিন জোন। এরমধ্যে বি ও সি জোনে ২১ তারিখ থেকে খুলে যাবে সেলুন-সহ সব দোকান। সেলুন-পার্লারে কড়া ভাবে স্বচ্ছতা ও সামাজিক দূরত্বের নীতি মানতে হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার ছ’দিন বাদ থেকে রাস্তায় চালু হবে অটো। তবে সর্বোচ্চ দু’জন করে যাত্রী বসতে পারবেন অটোতে।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২১ তারিখ থেকেই খুলবে সব বড়, মাঝারি ও ছোট দোকান। ২৭ তারিখ থেকে হকার বাজার খোলার চেষ্টা করা হচ্ছেও বলে জানিয়েছেন। তবে তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে পুরসভা ও পুলিশের যৌথ কমিটি। মূলত জোড় বিজোড় নীতিতেই হকার বাজার খোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
গ্রামাঞ্চলে আগেই কৃষি থেকে নির্মাণ কাজে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। এবার শহরাঞ্চলেও সেটা করতে চাইছে নবান্ন। ২১ মে থেকে দোকান, অফিস ইত্যাদি খুলতে শুরু করবে। আর তাই এক জেলা থেকে অন্য জেলায় বাস চলাচলও ওই দিন থেকে শুরু করার ঘোষণা করা হল সোমবার। এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ২১ মে বৃহস্পতিবার থেকে আন্তঃজেলা বাস পরিষেবা চালু করবে সরকার। সেই দিন থেকে সরকারি বাসের পাশাপাশি বেসরকারি বাস মালিকদের কাছেও পরিষেবা দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, সামাজিক দূরত্ব রক্ষার নিয়ম মেনেই চালাতে হবে বাস।
২১ মে বৃহস্পতিবার থেকেই রাজ্যের সংক্রমিত এলাকা ছাড়া সর্বত্র বড় ও মাঝারি দোকান খোলা যাবে বলে এদিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ওই দিন থেকে সরকারি ও বেসরকারি অফিসও ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে চালু করা যাবে। আর সেটা করতে গেলে গণপরিবহণ ব্যবস্থাও যে চালু করা দরকার সেটা বুঝেই বাস পরিষেবা চালু করতে চাইছে সরকার। তবে এখনই অটো পরিষেবা পাওয়া যাবে না। তার জন্য আরও কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে হবে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২৭ মে থেকে অটো চলাচল করতে পারবে। তার আগে বিভিন্ন অটো ইউনিয়নের সঙ্গে পুলিশ কথা বলে নেবে। তবে অটোতেও যাত্রী তোলার ক্ষেত্রে শর্ত দিয়েছে রাজ্য সরকার। জানানো হয়েছে, এক সঙ্গে সর্বাধিক দু’জন যাত্রীকে তোলা যাবে। চালক থেকে যাত্রী সকলেরই মাস্ক পরে থাকা বাধ্যতামূলক।
তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, সংক্রমিত এলাকায় এসব কোনও পরিষেবাই এখনও মিলবে না। রাজ্যে করোনা সংক্রমিত এলাকা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতিও নিয়েছে রাজ্য সরকার। কনটেনমেন্ট জোনও এখন থেকে বুথ ও ওয়ার্ড অনুসারে ভাগ করা হবে। একটি কনটেনমেন্ট জোনকে তিন ভাগে ভাগ করা হচ্ছে। ‘এ’- সংক্রমিত এলাকা, ‘বি’- বাফার এলাকা, ‘সি’- ক্লিন এলাকা। ‘এ’ এলাকায় আপাতত সব বন্ধ থাকবে। ‘বি’ চিহ্নিত এলাকায় কিছু বিধিনিষেধ থাকবে। ‘সি’ চিহ্নিত এলাকায় সব কিছু স্বাভাবিক ভাবে চলবে।
Be the first to comment