কথা ছিল দুপুর নাগাদ ঢুকে যাবে। কিন্তু একটু বেশি সময় লাগলেও বিকেল চারটে সতেরো নাগাদ সুন্দরবন উপকূল দিয়ে বাংলায় ঢুকে পড়ল সুপার সাইক্লোন। এই মুহূর্তে সেখানকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বোঝা সম্ভব নয়। সেখানে প্রায় ১৪০-১৫০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইছে।
এদিকে বিকেলে সাড়ে চারটেতেই কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ ১০৫ কিলোমিটার। দিকে-দিকে পড়ছে গাছ। বাড়ি ভেঙে পড়ারও খবর মিলছে। এই পরিস্থিতিতে নবান্ন থেকে বিপজ্জনক এলাকায় বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ দফতর থেকেও দুই ২৪ পরগনার বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
আমফানের দাপটে প্রায় লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে রাজ্য। কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে গিয়েছে ট্রাফিক সিগন্যালও। পরিস্থিতি এমনই, ওল্ড দীঘায় সমুদ্রের পাড়ে বোল্ডার থাকে, জলোচ্ছ্বাসের কারণে তা উঠে এসেছে একেবারে পাড়ে! শুধু তাই নয়, কলকাতাতেও সকাল থেকে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। ইতোমধ্যে কলকাতার বহু রাস্তায় ভেঙে পড়েছে গাছ। পরিস্থিতি দেখে কলকাতার সমস্ত ফ্লাইওভার বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। উম্পুনের প্রভাবে জলের তোড়ে ভেসে গেল হাওড়া ফেরিঘাট। এই সমস্ত ঝড়ের সময় লঞ্চগুলিকে চেনের সাহায্যে বেঁধে রাখা হয়।
ইতোমধ্যেই কলকাতার অন্তত ১৮টি জায়গায় গাছ পড়ে গিয়েছে। আর সেই গাছ রাস্তা থেকে সরানোর কাজে লেগে পড়েছেন পুরকর্মীরা। এই খবর নবান্নে থাকা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছতেই তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘এখন গাছ কাটতে হবে না। আগে নিজেদের জীবন বাঁচান। পরে গাছ কাটা যাবে।’ কলকাতার পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম নিজেও বলেছেন, ‘কলকাতাতে গাছ এবং বিপজ্জনক বাড়ি সবচেয়ে বেশি চিন্তার। এখনও পর্যন্ত ১৮ টি জায়গা থেকে গাছ পড়ার খবর পেয়েছি।’
আবহাওয়া দফতর আগেই জানিয়েছিল, পাথরপ্রতিমা, ক্যানিং, ভাঙড়, মিনাখাঁ, হাড়োয়া, ধান্যকুড়িয়া, গোবরডাঙা, বনগাঁ, হেলেঞ্চার উপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র বাংলাদেশের দিকে এগোতে পারে। এর দু’পাশে ৭৫ কিলোমিটার করে অঞ্চল সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা। সেই অনুযায়ীই বাংলাকে রীতিমতো লন্ডভন্ড করতে করতে এগোচ্ছে সুপার সাইক্লোন আমফান।
Be the first to comment