ঝড়ের পর তিন দিন কাটতে চলল৷ এখনও কলকাতা এবং সংলগ্ন বহু এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে পারেনি সিইএসসি৷ যার জেরে বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ করছেন সাধারণ মানুষ৷ এবার সিইএসসি-র ভূমিকাতেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ প্রয়োজনে জেনারেটর ব্যবহার করে বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পাশাপাশি, কোনওরকম উস্কানিতে পা দিয়ে বিক্ষোভ না দেখানোর জন্যও সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
এ দিন দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা সফরে যাওয়ার পথে কলকাতার তারাতলায় বিদ্যুৎ পরিষেবা ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভ চলতে দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী৷ বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে তিনি অনুরোধ করেন, যে ধরনের ভয়াবহ দুর্যোগ চলেছে, তাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগবে৷ পাশাপাশি দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফেই সিইএসসি-কে অনুরোধ করা হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ তাঁর নিজেরও যে ফোনে কথা বলতে সমস্যা হচ্ছে, বিক্ষোভকারীদের সেকথাও জানান মমতা৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কাল থেকে আমি নিজে সিইএসসি-কে দশবার ফোন করেছি৷ এটা তো সরকারের নয়, বেসরকারি সংস্থা৷ আমার নিজের ফোনও তো কাজ করছে না৷ এখন আমি লাইসেন্স বাতিল করে দিতে পারি, অ্যারেস্ট করতে পারি, কেস করে দিতে পারি, কিন্তু তাতে তো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দেরি হবে৷’
এর পরে কাকদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠকের পরেও সিইএসসি-র ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, সিইএসসি-কে বাম আমলে বরাত দেওয়া হয়েছিল৷ কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় সিইএসসি-র একাধিপত্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সিইএসসি এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা থাকা দরকার বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তবে নিজেদের পরিকাঠামো থাকায় আপাতত সিইএসসি ভাল করে কাজ করুক, এটাই তাঁরা চান বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ করতে হবে বলেও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য সিইএসসি কর্তৃপক্ষকে দেড়শোটি জেনারেটর ভাড়া করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
তবে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, লকডাউন চলায় বিদ্যুতের মতো বিভিন্ন পরিষেবা স্বাভাবিক করতে আরও সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ কারণ বহু শ্রমিকই এই সময় বাড়ি চলে গিয়েছেন৷ ফলে কর্মী সঙ্কটের কারণেই বহু এলাকায় মেরামতি করা সম্ভব হচ্ছে না৷
প্রসঙ্গত শুক্রবারই সিইএসসি-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন পুরমন্ত্রী এবং কলকাতা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের প্রধান ফিরহাদ হাকিম৷ তিনি জানিয়েছিলেন, সিইএসসি পরিষেবা স্বাভাবিক করতে সিইএসসি তৎপর না হলে সরকার অন্যভাবে ভাববে৷
Be the first to comment