একদিনে ফের রেকর্ড সংক্রমণ দেশে। করোনা শঙ্কা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। সংক্রমণের নিরিখে গতকালই দেড় লাখের গণ্ডি পেরিয়েছিল দেশ। আর আজ এক লাফে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ১ লক্ষ ৫৮ হাজার। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা বাড়ল ৬৫৬৬ জন। এই নিয়ে পরপর সাতদিন দৈনিক করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৬ হাজার করে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সকাল ৮টার বুলেটিনে দেখা গেল দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ৫৮ হাজার ৩৩৩। করোনা অ্যাকটিভ কেস অর্থাৎ শরীরে করোনা সংক্রমণ নিয়ে আইসোলেশনে রয়েছেন ৮৬ হাজার ১১০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুও হয়েছে রেকর্ড সংখ্যক। কেন্দ্রের হিসেব বলছে ভাইরাস সংক্রমণে একদিনে মৃতের সংখ্যা ১৯৪ জন। গত কয়েকদিনের তুলনায় যেটা অনেকটাই বেশি। এখনও অবধি দেশে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে মোট ৪ হাজার ৫৩১ জনের।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, গত রবিবার দেশে মোট সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৯০,৯২৭। সুতরাং আট দিনের মধ্যে করোনা রোগী বেড়েছে প্রায় ৫০ হাজার। আর এই রেকর্ড বৃদ্ধিতেই বিশ্বের প্রথম ১০ করোনা আক্রান্ত দেশের তালিকায় ঢুকে পড়েছে ভারত। যদিও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক দাবি করেছে কো-মর্বিডিটির কারণে প্রায় ৭০ শতাংশ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাই এখনও অবধি শুধুমাত্র করোনা সংক্রমণের জন্য মৃত্যুহার বিশ্বের মধ্যে ভারতেই অনেক কম, যা প্রায় ২.৮৭ শতাংশ।
মহারাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক। সংক্রমণের হার বেড়েই চলেছে। সে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ ৫৬ হাজারের গণ্ডি পেরিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৮৯৭ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে রাজধানীতেও। কেন্দ্রের হিসেব বলছে, দিল্লিতে এখনও অবধি সংক্রামিতের সংখ্যা ১৫ হাজার ২৫৭ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩০৩ জনের। তামিলনাড়ু ও গুজরাটের অবস্থাও তথৈবচ। তামিলনাড়ুতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ হাজার ছাড়িয়েছে। গুজরাটে ১৫ হাজার ১৯৫।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও সুস্থতার হারও অধিক। কেন্দ্রের বুলেটিনে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২৬৫ জন করোনা রোগী সংক্রমণ সারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। দেশে এখন কোভিড রিকভারি রেট অর্থাৎ করোনা সারিয়ে সুস্থতার হার ৪২.৭৫।
কেন্দ্রের হিসেব বলছে, গত ১৬ এপ্রিল থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত সরকারি ল্যাবগুলিতে কোভিড টেস্টের সংখ্যা ২৩,৯৩২ থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৮,৯৪৭। বেসরকারি ল্যাবগুলিতে এই সংখ্যা বেড়েছে ৪৪০৮ থেকে ২১৪৫০। বর্তমানে দেশের ৪৩১ টি সরকারি ও ১৭৮টি বেসরকারি ল্যাবে কোভিড টেস্টিং চলছে। প্রতিটি ল্যাবের পরিকাঠামো এমনভাবে গড়ে তোলা হয়েছে যাতে প্রতি দিনে প্রায় দেড় লক্ষের মতো স্যাম্পেল নির্ভুলভাবে টেস্ট করা যায়। সেই হিসেবেই প্রতি দিন কোভিড টেস্টের সংখ্যা ২ লাখ ধরা হয়েছে।
আইসিএমআর-ন্যাশনাল এইডস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (NARI)-এর এপিডেমোলজি বিভাগের প্রধান ডাক্তার শীলা গোড়বোলে জানিয়েছেন, অ্যান্টি-ভাইরাল ড্রাগ রেমডেসিভির, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন, লোপিনাভির-রিটোনাভির এবং লোপিনাভির-রিটোনাভিরের সঙ্গে ইন্টারফেরনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হবে। এই অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধগুলির বিভিন্ন কম্বিনেশন ও ডোজ রোগীদের শরীরে প্রয়োগ করে তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। সংক্রমণ কমাতে এই ওষুধগুলির কোন কোন কম্বিনেশন কাজে আসছে সেটা পরীক্ষা করে দেখা হবে।
Be the first to comment