ফের সংঘাত রাজ্য বনাম রাজ্যপালের। এবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সংঘাত চরমে উঠল। সোমবার বিকেলে একটি নির্দেশিকা জারি করেন রাজ্যপাল তথা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীপ ধনকড়। তাতে তিনি আইনের ধারা উল্লেখ করে প্রাণীবিদ্যার অধ্যাপক গৌতম চন্দ্রকে সহ উপাচার্য (প্রশাসন ও শিক্ষা) হিসেবে নিয়োগ করেছেন। এরপরই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, বিজেপির লোককে বসিয়েছেন রাজ্যপাল। অধ্যাপক গৌতম চন্দ্রকে সহ-উপাচার্য হিসেবে মানবে না রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্যের আবার পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য তথা প্রো ভিসির আসন খালি হয়েছে বেশ কয়েকদিন হল। নিয়ম হচ্ছে রাজ্য সরকার বা শিক্ষা দফতর একটি নাম পাঠায় রাজভবনে। রাজ্যপাল তথা আচার্য তাতে সিলমোহর দেন। কিন্তু পার্থর অভিযোগ, রাজ্য সরকার যে নাম দিয়েছিল তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী এদিন বলেন, “এটা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু। আমরা জানতাম উনি এটা করবেন। উনি বেছে বেছে বিজেপির লোককে বসাচ্ছেন। এটা আমরা কোনওভাবেই মানব না।”
তবে ঈএখানেই থামেননি শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “রাজ্যপাল এটা কীসের ভিত্তিতে ঠিক করলেন? রাজ্য সরকার অধ্যাপকদের মাইনে দেয়, এটা ভুলে গেলে চলবে না!”
যদিও এ ব্যাপারে সোমবার রাত আটটা পর্যন্ত রাজ্যপাল কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে রাজভবন সূত্রে বলা হচ্ছে, রাজ্য সরকার সুপারিশ করতেই পারে। তা যে আচার্যকে মানতে হবে এমন কোনও নিয়ম নেই। স্বশাসিত সংস্থার আচার্য হিসেবে তাঁর এক্তিয়ার রয়েছে উপাচার্য বা সহ উপাচার্য নিয়োগ করার।
এর আগে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আচার্য হিসেবে তাঁকে আমন্ত্রণ না জানানো নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ধনকড়। যাদবপুরের সমাবর্তনে আমন্ত্রণ পেলেও ছাত্র বিক্ষোভের জেরে গেটের সামনে থেকেই গাড়ি ঘুরিয়ে ফিরে আসতে হয় তাঁকে। তারপর নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে ধর্মতলায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিক্ষোভে একাধিক উপাচার্যর উপস্থিতি নিয়েও সমালোচনায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন রাজ্যপাল। এমনকি উপাচার্যদের ডাকলেও রাজভবনের দিকে যাননি তাঁরা। সেই সংঘাত এবার নতুন মাত্রা পেল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য নিয়োগের ঘটনায়।
Be the first to comment