১৩ জন কনস্টেবলকে বদলির পর এবার সরিয়ে দেওয়া হল ডেপুটি কমিশনারকেও । কলকাতা পুলিশের কমব্যাট ফোর্সের ডেপুটি কমিশনার নভেন্দ্র সিং পালকে বদলি করা হল ডেপুটি কমিশনার ওয়ারলেস হিসেবে। আজ তিনি দায়িত্বভার বুঝে নেবেন । কলকাতা পুলিশের অন্দরমহলের গুঞ্জন, বিক্ষোভের জেরেই এই বদলি বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল ।
কলকাতা পুলিশের তিনটি বিক্ষোভের ঘটনাতেই উঁচুতলার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নিচুতলার কর্মীরা । পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে বিক্ষোভের ঘটনায় ক্ষোভ ছিল DC কমব্যাটের বিরুদ্ধে । অভিযোগ ওঠে, যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই কনটেইনমেন্ট জ়োনে ডিউটিতে পাঠানো হচ্ছে বাহিনীর জওয়ানদের । দেওয়া হচ্ছে না পর্যাপ্ত স্যানিটাইজ়ার, মাস্ক । ১৯ মে কলকাতা পুলিশের কমব্যাট ফোর্সের একজন কোরোনায় আক্রান্ত হন । কোয়ারানটিন করা হয় ১৯ জনকে।
বিক্ষোভকারী পুলিশকর্মীদের দাবি ছিল, তাঁদের কোয়ারানটিন করা হয়েছে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলেই(PTS)। আর এখান থেকেই দানা বাঁধতে শুরু করে অসন্তোষ । সঙ্গে যোগ হয় আরও বেশ কয়েকটি বিষয় । অভিযোগ, কোরোনা মোকাবিলায় কাজ করা পুলিশকর্মীরা পর্যাপ্ত পরিমাণে মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার পাচ্ছেন না। অনবরত কাজ করে চলা পুলিশকর্মীরা একদিনের জন্যও ছুটি পাননি লকডাউনের মাঝে । এ নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে । যার বিস্ফোরণ হয় সেই রাতে। রীতিমতো লাঠি, বাঁশ হাতে পথে নেমে পড়েন তাঁরা । রাত সাড়ে দশটা নাগাদ DC-র কাছে অভিযোগ জানাতে যান একদল পুলিশকর্মী। তারপরই শুরু হয় বিক্ষোভ । প্রায় ৫০০ পুলিশকর্মী রাস্তায় নেমে পড়েন । অবরুদ্ধ হয়ে যায় রাস্তা ।
বিক্ষোভকারী পুলিশকর্মীরা শারীরিক নিগ্রহ পর্যন্ত করেন DC কমব্যাটকে । এমনকী পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের অন্দরমহলে নাকি চালানো হয় ভাঙচুর । পরের দিনই নবান্ন যাওয়ার পথে সেখানে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । শোনেন অভাব-অভিযোগ । আশ্বাস দেন ব্যবস্থা নেওয়ার।
এই ঘটনার পর সল্টলেক এবং গড়ফা থানায় বিক্ষোভ হয় । সল্টলেকের বিক্ষোভের জেরে ব্যবস্থা নেওয়া হয় এক অ্যসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর সহ চার কনস্টেবলের বিরুদ্ধে । সরিয়ে দেওয়া হয় একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারকে । তারপর গতকাল পুলিশ ডাইরেক্টর থেকে কলকাতা পুলিশের ১৩ জন কর্মীর বদলির নির্দেশিকা জারি হয়। তার মধ্যে ৬ জন কমব্যাট ব্যাটেলিয়নের সদস্য। একজন কমব্যাট ব্যাটালিয়নের সদস্য হয়েও ডিজ়াস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপে কর্মরত ছিলেন । ৫ জন প্রথম এবং দ্বিতীয় ব্যাটেলিয়নের সদস্য। তাঁরা ডিজ়াস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপে কাজ করতেন। আর একজন র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সে কর্মরত ছিলেন। এদের বদলি করা হয়েছে মূলত কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং জেলায় । পাশাপাশি বদলি করা হল ডেপুটি কমিশনারকেও ।
Be the first to comment