রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা না করেই বিদ্যুৎ আইনে বদল আনার জন্য কেন্দ্রের বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংশোধিত বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ বিলটি জনবিরোধী, কৃষক বিরোধী এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রের স্বার্থ বিরোধী। মফস্বল ও গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী উপভোক্তাদের জন্যও তা অমানবিক। তাই অবিলম্বে বিলটি প্রত্যাহার করা হোক।
মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা, এই বিল আইন হলে বিদ্যুতের বিল ব্যাপক হারে বাড়বে। প্রস্তাবিত বিলে শুল্ক নির্ধারণের জন্য কেন্দ্রের গঠিত সংস্থাকে ক্ষমতা দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সব ক্ষমতা রাজ্যের থেকে কেন্দ্রের হাতে চলে যাবে। বিদ্যুতের মাশুল কেন্দ্র একতরফা ভাবে ঠিক করবে তা মানতে রাজি নন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেকথাই তিনি চিঠিতে লিখেছেন।
প্রসঙ্গত, বিদ্যুৎ পরিবহণ ও সংবহন এবং বণ্টন সংক্রান্ত আইনি বিবাদ নিষ্পত্তির জন্য ইলেকট্রিসিটি কনট্র্যাক্ট এনফোর্সমেন্ট অথরিটি (ECEA) নামে একটি সংস্থা গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্র। মমতা এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে চিঠিতে লিখেছেন, বিবাদ মেটাতে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন নামে দু’টি সংস্থা রয়েছে। আরও একটি সংস্থা গঠনের প্রয়োজন নেই। মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, বিদ্যুৎ বণ্টনে ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রবেশের অর্থ, পছন্দসই সংস্থাকেই সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। এর পিছনে ‘অসৎ উদ্দেশ্য’ দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, করোনা-লকডাউন চলাকালীনই, গত ১৭ এপ্রিল কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রক বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল ২০২০-র খসড়া প্রকাশ করে প্রতিটি রাজ্যের অভিমত জানতে চেয়েছিল। ইতোমধ্যেই এই খসড়া বিলের বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি ও ডিএমকে বামদলগুলি। সংসদে খসড়া বিল পেশ হলে তার বিরোধিতার প্রস্তুতিও শুরু করেছে বিরোধীরা।
উল্লেখ্য, এই বিলের বিরোধিতা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও দিয়েছেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। প্রসঙ্গত, এই আইন সংশোধনের বিরোধিতা করে জুনের শুরুতে দেশজুড়ে কালা দিবস পালন করেছে বিদ্যুৎকর্মী এবং ইঞ্জিনিয়ারদের ১৪টি সংগঠনের যৌথ কমিটি।
Be the first to comment