গালওয়ান উপত্যকায় চিনা আগ্রাসন নিয়ে সর্বদল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর দাবিকে তীব্র কটাক্ষ করলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তাঁর প্রশ্ন, গালওয়ানে অনুপ্রবেশ না ঘটলে কেন ২০ জওয়ানের মৃত্যু হল? শুক্রবার সর্বদল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “কেউ আমাদের সীমায় ঢোকেনি। কেউ আমাদের সীমায় নেই। কোনও সেনা চৌকিও দখল হয়নি। লাদাখে আমাদের ২০ জওয়ান শহিদ হয়েছেন। কিন্তু ভারত মাতার দিকে যারা চোখ তুলে দেখেছে, তাঁদের শিক্ষা দিয়েছেন সেনা জওয়ানরা।”
মোদী এও বলেছেন, “এখন দেশ সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। কেউ ভারত মাতার দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারে না। সেনা সবসময়, সব জায়গায় সচেষ্ট রয়েছে। সেনার হাতে সমস্ত অস্ত্র রয়েছে। দেশ তাঁদের উপর ভরসা রাখে, আর জওয়ানরাও সেই ভরসার সম্পূর্ণ মর্যাদা রেখে চলে।”
প্রধানমন্ত্রীর এই দাবির পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, চিনা সেনা যদি ভারতীয় ভূখণ্ডে না ঢুকে থাকে, তাহলে সংঘাত বাঁধল কেন? কেনই বা প্রাণ খোয়াতে হল ২০ জন জওয়ানকে? তাহলে চিনের সৈন্যরা কোথায় এবং কেন আক্রমণ করে বসল ভারতীয় সেনার উপর?
শনিবার ট্যুইটারে মহুয়া মৈত্র লেখেন, “সর্বদল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন গালওয়ানে কোনও অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেনি। ভারতীয় ভূখণ্ড বেদখলও হয়নি। আমি বুঝতে পারছি না, যদি কিছু না ঘটে থাকে, তাহলে উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা কেন? কেন সেনা এবং কূটনৈতিক পর্যায় আলোচনা? কেন এই মৃত্যু?”
উল্লেখ্য, সর্বদলীয় বৈঠকে এ ব্যাপারে আরও বিশদে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, “কবে চিনা সেনা নিয়ন্ত্রণ রেখার এপারে ঢুকে পড়েছিল। তারা কি ৫ মে থেকেই ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েছিল? সে কথা কি সরকার জানত। সরকার কি নিয়মিত ভাবে উপগ্রহ চিত্র থেকে দেশের সীমান্ত পরিস্থিতি জানতে পারে? আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী কি জানতে পারেনি যে সীমান্তের ওপারে ষড়যন্ত্র চলছে! সেনা গোয়েন্দারা কি সরকারকে সতর্ক করেনি। তা হলে কি কোনও গোয়েন্দা ব্যর্থতা রয়েছে বলে সরকার মনে করে?” এই বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েও গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেছেন, “আমাদের মতে পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। কিন্তু এটা হঠাৎ করে হয়নি। নিয়মিত ভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় শর্ত লঙ্ঘন করছে চিন। গত কয়েক মাস ধরে সীমান্তে বড় সড় পরিকাঠামো গড়ে তুলেছে। আমরা কী তা জানতাম না?” মমতা বলেন, “১৯ এপ্রিল সীমান্তে হেভি ট্রাকের মুভমেন্ট হয়েছে।
৫ থেকে ৬ জুন, ১৫ থেকে ১৮ জুন সীমান্তে পরিস্থিতি অশান্ত ছিল। নিয়মিত ভাবে কি গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না?” চিনা সেনা ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে কতটা এলাকার দখল নিয়ে রেখেছে সেই প্রশ্নও তুলেছেন মমতা।
Be the first to comment