‘আমাদের সীমান্ত পেরিয়ে ওখানে কেউ ঢুকে আসেনি। আমাদের এলাকায় কেউ ঢুকেও বসে নেই।’ লাদাখে চিনা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় জওয়ানের শহিদ হওয়া প্রসঙ্গে সর্বদল বৈঠকে গতকাল এই মন্তব্যই করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর মন্তব্যে ‘ওখানে’ অর্থাৎ লাদাখ এবং ‘কেউ’ বলতে চিনকেই বোঝানো হয়েছে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যকেই হাতিয়ার করে পালটা আক্রমণ দেগেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী-সহ বিরোধীরা।
শুক্রবারের সর্বদল ঘিরে শনিবার বিরোধী আক্রমণ বাড়তে থাকলে বিবৃতি জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের ব্যাখ্যায় সরকার জানিয়েছে, ‘গতকাল সর্বদল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্য়া ছড়াতে এক শ্রেণি সচেষ্ট হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণ ছিল, আমাদের ভারতীয় জওয়ানদের বীরত্বের কারণেই ভারতীয় ভূখণ্ডে কোনও চিনা (সেনার) অস্তিত্ব নেই। ১৬ বিহার রেজিমেন্টের বলিদানের কারণেই চিনা অনুপ্রবেশের চেষ্টা রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছে এবং ওইদিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় যে অপচেষ্টা করা হয়েছিল, তা বানচাল করা সম্ভব হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের পাশে দাঁড়িয়ে পালটা টুইট করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ‘রাজনীতি ছেড়ে রাহুল গান্ধীর উচিত জাতীয় স্বার্থে সহমর্মিতা জানানো।’ টুইটে কংগ্রেস নেতাকে স্পষ্ট আক্রমণ শাহের। নাম না করে রাহুল গান্ধীকে নিশানা করেছেন BJP সভাপতি জে পি নাড্ডাও। ভার্চুয়াল র্যালির সভা থেকে তাঁর তোপ, ‘উনি তো নিজের প্রধানমন্ত্রীকেও সম্মান করতেন না। প্রকাশ্যে অর্ডিন্যান্স ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। গলওয়ানে দেশ যখন লড়াই করছে, উনি তখন টুইটারে নির্বুদ্ধিতা দেখাতে ব্যস্ত।’
লাদাখ নিয়ে প্রথম থেকেই বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, চিনের সেনা ভারতের এলাকা দখল করে বসে থাকলেও মোদী সরকার তা অস্বীকার করেছে। অন্ধকারে রেখেছে গোটা দেশকেই। সর্বদলীয় বৈঠকেও কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী, ‘৫ মে লাদাখে চিনা অনুপ্রবেশের পরই সরকারের সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা উচিত ছিল।’ চিন স্বৈরতান্ত্রিক দেশ হলেও ভারত যে গণতান্ত্রিক তা মনে করিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে ‘সবাইকে নিয়ে চলার’ কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন।
Be the first to comment