১২ ঘন্টা ধরে সীমান্তে বৈঠক করেও ফল মেলেনি। নিজেদের অবস্থানে অনড় ভারত-চিন। ফলে কোনও বৈঠকেই মিলছে না সমাধান সূত্র। এদিকে সিকিমেও ছড়িয়েছে সীমান্ত উত্তাপের রেশ। এরই মাঝে মঙ্গলবার ২৩শে জুন লাদাখ পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাবেন সেনাপ্রধান এমএম নারাভানে।
মঙ্গলবার লেহতে ১৪ কর্পসের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। কর্পস কমান্ডারদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথাও রয়েছে তাঁর। লাদাখে দুদিনের সফরে যাচ্ছেন নারাভানে। গালওয়ান ভ্যালিতে ১৫ই জুনের সংঘর্ষে আহত জওয়ানদের সাথে দেখা করার কথা রয়েছে তাঁর। লাদাখের এই মুহুর্তের পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখবেন সেনাপ্রধান। কেন দুদেশের বারবার বৈঠকেও কোনও ঐক্যমত্য মিলছে না, তা যাচাই করে দেখবেন নারাভানে। ফেরার পথে শ্রীনগরে ১৫ কর্পসের সাথেও দেখা করার কথা রয়েছে তাঁর।
সোমবার ২২শে জুন বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ বৈঠকে বসেন ভারত এবং চিনের শীর্ষ সেনা আধিকারিকরা। বৈঠক চলে প্রায় রাত সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত। কিন্তু সেই বৈঠকে কোনও মীমাংসা সূত্র বেরোয়নি বলে খবর।
আজ মঙ্গলবার ফের একবার দু’দেশের মধ্যে হাই-প্রোফাইল এই বৈঠক চলবে বলে জানা যাচ্ছে। মঙ্গলবার বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত হয় সেদিকেই তাকিয়ে গোটা দেশের মানুষ। ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদন জানাচ্ছে, বেশ কয়েকটি বিষয়ে ঐক্যমত্যে আসা যাচ্ছে না। এই বৈঠকে চিনের কাছে কয়েকটি দাবি রেখেছে ভারত।
নয়াদিল্লি চাইছে ৪ঠা মের আগে গালওয়ান ভ্যালিতে দুই দেশের সেনার যে অবস্থান ছিল, তা ফের ফিরে আসুক। ভারতের এই বক্তব্য একেবারেই সহমত নয় বেজিং। কোনওভাবেই নিজেদের পুরোনো অবস্থানে ফেরত যেতে রাজি হচ্ছে না চিন সেনা। অন্যদিকে ভারতও নিজেদের দাবিতে অনড়। ভারতের আরেকটি দাবি হল সীমান্ত জুড়ে যে নির্মাণ কাজ চালু করেছে চিন সেনা, তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
এই দাবিটিও নিজেদের জাতীয় সুরক্ষার দোহাই দিয়ে মানতে চাইছে বেজিং। এই দুটি ইস্যুতে আপাতত সরগরম সীমান্ত বৈঠক। এদিকে, গালওয়ান ভ্যালি ও প্যাংগঙ লেকে ভারত চিন সীমান্তের উত্তাপ সিকিম সীমান্তেও ছড়িয়েছে। সিকিমের অতি উচ্চতায় ভারত চিন সেনা সংঘর্ষের ছবি প্রকাশিত হয়েছে।
১৫ই জুন লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে ভারতীয় ভূখণ্ডে তাঁবু খাটিয়েছিল চিনা সেনা। সেই তাঁবু সরানোর কথা বলতেই ভারতীয় সেনার সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদ শুরু হয়ে যায় চিনা সেনার। মুহূর্তে সেই বাদানুবাদ হাতাহাতিতে পৌঁছে যায়। এরপরই লোহার রড, পাথর নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপর হামলা চালায় চিনা সেনা। দু’পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা-জওয়ান নিহত হন।
এদিকে, প্যাংগঙে নির্মাণ কাজ রীতিমত জোরকদমে শুরু করে দিয়েছে চিন। ৮ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বাঙ্কার বানিয়ে ফেলেছে চিন সেনা। প্যাংগঙের যে এলাকা ভারত নিজের বলে দাবি করে, সেই এলাকাতেই বানানো হয়েছে বাঙ্কার বলে খবর।সেই সব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই লাদাখে যাচ্ছেন সেনাপ্রধান।
Be the first to comment