আনলক শুরু হতেই পেট্রল-ডিজেলের দাম সমানে বেড়ে চলেছে। আবারও বাড়ল জ্বালানির দাম। এই নিয়ে টানা ১৮ দিন। ১৭ দিন ধরে রোজ দাম বাড়ার পর বুধবার পেট্রলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে দামের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত ডিজেলে।মঙ্গলবারের কলকাতায় লিটারপিছু পেট্রলের দাম ছিল ৮১.৪৫ টাকা। বুধবারও তা অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে ডিজেলের দাম বেড়ে হয়েছে ৭৫.০৬ টাকা।
এ দিকে, ডিজেলের দামবৃদ্ধিতে দিল্লিতে পেট্রলের থেকে বেশি হয়ে গিয়েছে ডিজেলের দাম। দিল্লিতে পেট্রলের দাম লিটারপিছু ৭৯.৭৬ টাকাই রয়েছে। কিন্তু ডিজেলের দাম লিটারে ৭৯.৮৮ টাকা হয়েছে।
১৬ মার্চ থেকে টানা ৮২ দিন অপরিবর্তিত থাকার পর বাড়ে পেট্রল-ডিজেলের দাম। গত ১৬ দিনে দিল্লিতে পেট্রলের দাম লিটার পিছু ৯.২১ টাকা এবং ডিজেলের দাম প্রতি লিটার ৮.৫৫ টাকা বাড়িয়েছে তেল সংস্থাগুলি। মঙ্গলবার দিল্লিতে পেট্রলের দাম লিটারপিছু ২০ পয়সা ও ডিজেলের দাম লিটারপিছু ৫৫ পয়সা বেড়েছিল।
চার মেট্রো শহরে বুধবার লিটারপিছু পেট্রল ও ডিজেলের দাম কী, তা দেখে নেওয়া যাক একনজরে…
শহর পেট্রলের দাম, ডিজেলের দাম
কলকাতা ৮১.৪৫, ৭৫.০৬
দিল্লি ৭৯.৭৬, ৭৯.৮৮
মুম্বই ৮৬.৫৪ ৭৮.২২
চেন্নাই ৮৩.০৪,৭৭.১৭
লকডাউনের ধাক্কা কাটিয়ে অর্থনীতি যখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করছে, সেই সময় পেট্রল-ডিজেলের, বিশেষ করে ডিজেলের দামে এত অল্প সময়ে এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পণ্য ও গণপরিবহণের খরচের মাধ্যমে সামগ্রিক মূল্যবৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগাবে তা তাতে কোনও সন্দেহ নেই। ডিজেলের দাম বাড়ায় বেসরকারি বাসের মালিকরা ইতোমধ্যেই ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, করোনা সংক্রমণের ভয় ও সরকারি নির্দেশের জেরে এমনিতেই কম সংখ্যক যাত্রী নিয়ে বাস চালাতে হচ্ছে। তার ওপর এত চড়া দরে ডিজেল কিনতে হলে, তাঁদের আরও লোকসান হবে। তাই মালিকরা দাবি জানিয়েছেন, ভাড়া বাড়ানো হোক। এর সঙ্গে রয়েছে উম্পুনের ধাক্কা। ঘূর্ণিঝড়ে বাজারে শাক-সব্জির দাম আকাশছোঁয়া। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাছ-মাংসের দাম।
সোমবার তৃণমূলের নিশানায় ছিল কেন্দ্রের গরিবকল্যাণ রোজগার যোজনায় বাংলার নাম না থাকার প্রসঙ্গ। মঙ্গলবার জ্বালানির দাম বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় তুলল রাজ্যের শাসকদল। দলের নেতা-মন্ত্রী-সাংসদরা পেট্রল ও ডিজেলের লাগাতার দাম বৃদ্ধি নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন, দীনেশ ত্রিবেদী, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়রা টুইটারে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি নিয়ে সরব হন।
যদিও বাম-কংগ্রেস তৃণমূলের এই প্রতিবাদকে ফাঁকা আওয়াজ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, তৃণমূল যদি সত্যিই জ্বালানির বর্ধিত দাম থেকে মানুষকে সুরাহা দিতে চায়, তা হলে রাজ্য সরকার বলুক পেট্রল, ডিজেলের উপর বিক্রয় করের বোঝা কমাতে। তাদের বক্তব্য, জ্বালানি তেলকে জিএসটির আওয়ায় আনলেই দাম অনেকটাই কমে যাবে। তবে কেন্দ্র বা রাজ্য কোনও সরকার এই ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
Be the first to comment