একেই বলে লঘু পাপে গুরু দণ্ড। তবে অপরাধ যে একেবারে লঘু ছিল তা নয়। কিন্তু তার জন্য দুটি প্রাণ চলে যাওয়ার মতো ঘটনা একেবারেই অনভিপ্রেত। ঘটনাটি তামিলনাড়ুর থোথুকুড়ি ডিভিশনের কোভিলপাত্তির সাব-জেলে। মৃত দুজন সম্পর্কে বাবা ও ছেলে ।
পরিবারের অভিযোগ , জেলে দু’জনের উপর পাশবিক অত্যাচার চালায় থোথুকুড়ি ডিভিশনের পুলিশ। তাঁদের উপর শারীরিক নির্যাতন চালান হয়। অভিযোগ মৃত জয়রাজ পি-এর পায়ুদ্বারে লাঠি বা বোতল জাতীয় কিছু ঢুকিয়ে দেয় পুলিশ। তার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন বৃদ্ধ জয়রাজ।
তারপর হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শেষরক্ষা হয়নি। মঙ্গলবার মারা যান তিনি। অন্যদিকে, মাত্র ১০ ঘণ্টার আগে সোমবার ছেলে জে বেনিক্সও প্রবল রক্তক্ষরণের জেরে মারা যায় হাসপাতালে। যদিও পুলিশের দাবি, প্রচণ্ড বুকে ব্যথা হওয়ায় বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে, মারা যান তিনি।
মৃতের পরিবারের জানিয়েছে, এলাকায় জয়রাজ পি’র মোবাইলের দোকান রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল , লকডাউনের সময় জনতা কার্ফুচলাকালীন আইন অমান্য করে দোকান খুলেছিলেন তিনি। আর সেই অপরাধে শনিবার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। ঘটনার কথা শুনে ছেলে জে বেনিক্সও তড়িঘড়ি থানায় যায় বাবাকে ছাড়িয়ে আনতে। যদিও দু’জনেই আর বাড়ি ফিরে আসেনি। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশই নির্যাতনের জেরেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।
এপ্রসঙ্গে একটি সমর্থিত সূত্র জানিয়েছে, অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পর পুলিশ শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ থানার দরজা বন্ধ করে দেয়। শনিবার সকাল পর্যন্ত দরজা খোলা হয়নি। এমনকি সারা রাত থানা থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূর পর্যন্ত দু’জনের চিৎকারের আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে শনিবার ১৮৮, ৩৮৩ এবং ৫০৬ (ll) ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ।
এদিকে, বাবা-ছেলের মৃত্যুর পড় ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। গ্রামের হাজার হাজার মানুষ থানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান। অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকদের গ্রেফতারির দাবিতে অবস্থানে বসেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই মর্মান্তিক এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মামলা দায়ের হয়েছে আদালতে। ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকাবাসী। নিন্দার ঝড় উঠেছে গোটা দেশে।
Be the first to comment