লাদাখে ফের চিনা অনুপ্রবেশ! হুঁশিয়ারি ভারতের

Spread the love

ফের ভারতীয় এলাকা দখল করল চিন। পূর্ব লাদাখের গলওয়ান উপত্যকার পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪ (PP14)-এ ফের ঘাঁটি গেড়েছে চিনা সেনা। এর জেরে ভারতীয় সেনার টহলদারিতেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৫ জুন গলওয়ান উপত্যকায় চিন সেনা কাঠামো তৈরির চেষ্টা করলে বাধা দেন ভারতীয় জওয়ানরা। যার জেরে দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে। তখনকার মতো পিছু হটলেও ১০ দিন পর ফের একই এলাকায় হাজির চিন।

ইকনমিক টাইমসের খবর অনুযায়ী, পিপি ১৪-তে চিনা ছাউনির অস্তিত্ব সম্পর্কে রিপোর্ট করেছে ভারতীয় সেনা। স্যাটেলাইট চিত্রেও ধরা পড়েছে একই ছবি। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, পিপি ১৪-তে চিনা অস্তিত্বের জন্য পিপি ১০, ১১, ১২ এবং ১৩-তে যাতায়াতে বাধা পাচ্ছে ভারতীয় সেনা। যার ফলে কয়েকশো কিলোমিটার এলাকায় নজরদারি বন্ধ রাখতে হয়েছে। সাম্প্রতিক লাদাখ সফর সেরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন সেনাপ্রধান এম এম নারাভানে। যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গেও কথা বলেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

‘অস্ত্র নিয়ে সক্রিয় চিনা সেনাকে বিভিন্ন এলাকায় (LAC বরাবর) দেখা গেছে। ওদের পিছনে অপেক্ষা করছে আরও বড় চিনা সেনা।’ এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে ET। গলওয়ান ও প্যাংগং ছাড়াও ডেপসাং নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ডেপসাং এলাকার একটি বড় অংশে চিনা অনুপ্রবেশ হয়েছে বলে ইতোমধ্যেই সরব হয়েছে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা।

প্রসঙ্গত, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে লাদাখের মতো দুর্গম এলাকায় সেনা ও রসদ দ্রুত পৌঁছে দিতে এই ডেপসাংয়ের কাছে সম্প্রতি একটি এয়ারস্ট্রিপ বানিয়েছিল নয়াদিল্লি। যা নিয়ে আপত্তি ছিল বেজিংয়ের।

এদিকে, বেজিংকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভারত। চিনে অবস্থিত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিসরি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে PTI-কে জানিয়েছেন, ‘বেজিংকে বুঝতে হবে লাদাখে স্থিতাবস্থায় আঘাতের চেষ্টা হলে, তার ফলও কিন্তু ভুগতে হবে।’ ভারতীয় বাহিনীর স্বাভাবিক ‘টহলদারি’তে বাধা সৃষ্টি না করলে ‘সীমান্ত সংঘাত’ বন্ধ হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, বুধবার থেকেই লাদাখে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন শুরু হয়েছে। বেশি উচ্চতায় লড়াইয়ে প্রশিক্ষণপ্রান্ত সেনা ও কমান্ডোকে পাঠানো হয়েছে। সেনা সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহেই কাশ্মীর থেকে দুটি প্যারা কমান্ডো ইউনিটকে লাদাখে পাঠানো হয়েছে। শ্রীনগর ও লেহ থেকে সাত ব্যাটলিয়ন সেনা লাদাখে পৌঁছেছে। এছাড়াও দিনভর চক্কর কাটছে বায়ুসেনার বিমানও।

এর পাশাপাশি লকডাউনের সময় নেপালে আটকে পড়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৫ হাজার জওয়ানকে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। নেপালি বা গোর্খা জওয়ানরা পাহাড়ের বাসিন্দা হওয়ায় কম অক্সিজেনে মানিয়ে নিয়ে পাহাড়ি পরিবেশে যুদ্ধে পটু।

সেনা সূত্রের খবর, সাতটি গোর্খা রেজিমেন্টের অন্তত ৪০ হাজার গোর্খা ভারতীয় সেনার অঙ্গ। এরমধ্যে নেপালে আটকে পড়া ৫০০০-কে দ্রুত ফেরাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে অনুরোধ করা হয়েছে। নেপালি জওয়ানদের কাজে যোগদানের বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশও জারি করা হয়েছে। নেপাল থেকে ফেরানোর ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাহায্যও চাওয়া হয়েছে বলে সাংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত।

এছাড়াও দেশে ফিরলে ওই জওয়ানদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হবে বলে জানা গেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*