বন্যা-করোনায় বিপর্যস্ত অসমের মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন নরেন্দ্র মোদীর

Spread the love

এক করোনায় রক্ষে নেই। দোসর বন্যা। গোটা অসমে যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ লাগামছাড়া হয়ে উঠছে, তখন বন্যা পরিস্থিতিও আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। অসম স্টেট ডিজাজটার ম্যানেজমেন্ট অথোরিটি ইতোমধ্যে জানিয়েছে, বন্যার প্রভাব পড়েছে রাজ্যের প্রায় ৩১টি জেলায়। রাজ্যের মোট সাড়ে চার হাজার গ্রামের পরিস্থিতি ভয়াবহ। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কমপক্ষে ৪৮ লক্ষ ৭ হাজার মানুষ। এই পরিস্থিতিতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়ালকে ফোন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

রবিবার সকালে অসমের মুখ্যমন্ত্রী সোনওয়াল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমাকে সকালে ফোন করেছিলেন। অসমের বন্যা, করোনা পরিস্থিতি ও বাঘজান তৈলখনিতে আগুন লাগার বিষয়ে সমস্ত কিছু জানতে চান। তিনি পুরো পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তা ব্যক্ত করেছেন। অসমের মানুষের পাশেই তিনি রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে অসমকে যাবতীয় সাহায্য দেওয়ার বিষয়েও অঙ্গীকার করেছেন।’

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, টেলিফোনে কথা বলার সময়ে প্রধানমন্ত্রীকে সোনওয়ালও বন্যা সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বলেন, রাজ্যের মোট ৩৩টি জেলার মধ্যে ৩১টি জেলাই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী পরিস্থিতি মোকাবিলায় অসামকে সর্বত ভাবে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন।

অসমের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, গোটা রাজ্যের প্রায় ৩১৮১ টি গ্রাম জলের তলায়। মোট ৮৭.৬০৭ হেক্টর জমির শস্য সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের মোট ২৪টি জেলায় ৩২৭টি ত্রাণকেন্দ্র খোলা হয়েছে। এই ত্রাণকেন্দ্রগুলিতে প্রায় ১৭ হাজার জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

রবিবার রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। প্রায় ৪৯ লক্ষ মানুষ বন্যার কবলে পড়েছেন, মারা গিয়েছেন ৭১জন। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বরপেটা জেলার। এই জেলায় প্রায় ৭.৩৫ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। এর পরেই মরিগাঁও, সেখানে বন্যার কবলে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় তিন লক্ষ মানুষ। অবস্থা ভালো নয় ধুবড়িরও, সেখানকার প্রায় ৩.৩৮ লক্ষ মানুষ বন্যা কবলিত।

অত্যন্ত শোচনীয় অবস্থা কাজিরাঙার। অসমের এই কাজিরাঙাতে বিলুপ্ত প্রজাতির গন্ডারের বাসস্থান, সম্প্রতি দেখা মিলেছে সোনালি বাঘেরও। আরও নানা পশুপাখির বাসস্থান সেখানে। গোটা অসমই যেখানে কার্যত জলের তলায়, সেখানে বন্যার জেরে ৭১ জন মানুষের পাশাপাশি প্রাণ হারিয়েছে কাজিরাঙার ৭৬টি বন্যপ্রাণীও।

যার মধ্যে রয়েছে ৬টি গন্ডার রয়েছে৷ ১৭০টি প্রাণীকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে অসমের বন দফতর। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবারই অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল কাজিরাঙায় গিয়েছিলেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*