২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটাই ছিল শেষ একুশের সভা। কিন্তু করোনা প্যানডেমিকের কারণে বদলে গেল ছবিটা। ভিড়ে ঠাসা ধর্মতলার বদলে ভার্চুয়াল জমায়েত। এবার ২৬ বছরে পা রাখল তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবস পালন।
আর মঙ্গলবারের শহিদ দিবসের সভা থেকে কার্যত ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের কাজ শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সরকার মানুষের উন্নয়নে কী কী পদক্ষেপ করেছে তার খতিয়ান দেওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন তিনি। তাঁর বক্তব্যের সিংহভাগ জুড়েই ছিল কেন্দ্র এবং বিজেপির প্রতি তীব্র ঝাঁঝ।
এদিন বক্তব্য রাখতে উঠে প্রথমেই শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে ধর্মতলায় সভা না করতে পারায় ব্যথিত ৷ আগামী বছর বিধানসভা ভোটের পর সবচেয়ে বড় সভা হবে ৷ পরের বছর জিতে এসে ২১ জুলাই ঐতিহাসিক সভা করব ৷’
তিনি বলেন, ‘গত লোকসভা ভোটে কয়েকটা আসন জিতে গোটা পৃথিবী জয় করে ফেলেছে বলে মনে করছে। ২০২১-এ ওদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। তারপর ২১শে এত বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সভা দেখবে এই রাজ্য।’
মমতা আরও বলেন, ‘সিপিএম-এর জমানায় আমাকে বারবার শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে। আর বিজেপি ক্রমাগত অপমান করে চলেছে। ওরা আমাকে অপমান করছে, বাংলাকে অপমান করছে, বাংলার মানুষকে অপমান করছে। ভুয়ো খবর ছড়িয়ে মানুষের মনে ভুল ধারণা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। কেন্দ্র দিনে-দুপুরে অপমান করছে। এর বদলা আমরা নেব, এর বদলা আমরা মানবিকতা দিয়ে নেব। বাংলার মানুষ জানিয়ে দেবে যে কোনও বহিরাগত বাংলাকে শাসন করবে না। বাংলা মানুষই বাংলা চালাবে। গুজরাত বাংলা শাসন করবে না।’
সরাসরি প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম না করে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ওই দুই ভাই হয়েছেন, গোটা দেশটাকেই গুজরাত চালাবে। এরা সংবিধানকে আক্রমণ করছে, পুলিশকে আক্রমণ করছে, সাংবাদিকদের আক্রমণ করছে, সাধারণ মানুষকে আক্রমণ করছে। এরা মনে করে টাকা ছড়িয়ে সব কিছু কিনে নেওয়া যায়। সেই টাকা গরীব মানুষকে দিক না, তাঁদের কাজে লাগে।’
কোভিড পরিস্থিতিতেও মানুষ এনআরসি-এনপিআর-এর কথা ভুলে যায়নি বলে জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন ‘এখানে সবাই নাগরিক। তুমি কে কাউকে নাগরিকত্ব দেওয়ার? সব উদ্বাস্তুরা আমাদের লোক। মানুষে-মানুষে ভেদাভেদ সৃষ্টি করা ছাড়া আর কোনও কাজ নেই? ওরা বলে, বাংলায় নাকি আইনশৃঙ্খলা নেই। বাংলায় আইনশৃঙ্খলা না থাকলে কোথায় আছে? উত্তরপ্রদেশে তো জঙ্গলরাজ চলছে। অসমে এনআরসি-র নামে কী অত্যাচার করল। তৃণমূলই একমাত্র জায়গা যেখানে শাসন করার লোক আছে, শোষণ করার লোক নেই।
Be the first to comment