দেবাশিস ভট্টাচার্য
সম্প্রতি বাংলার রাজনীতিতে একটা জিনিস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রশান্ত কিশোরের নেতৃত্বাধীন আইপ্যাকের টিমের কর্মীরা জেলার বামপন্থী নেতা, কর্মীদের বাড়িতে যাচ্ছেন। কর্মী হলেও হতো, ৫০ বছর ধরে বামপন্থী রাজনীতি করা জেলায় সুপরিচিত ৭০ বছর বয়সি নেতাদের বাড়িতেও চলে যাচ্ছেন। গিয়ে বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিন। বামপন্থী নেতারা মুখের উপর না বলে দিচ্ছেন। বামপন্থী নেতারা যে রাজি হবেন না এটা প্রশান্ত কিশোর ভালোই জানেন।
তবু তিনি কর্মীদের দিয়ে এই কাজটা করাচ্ছেন। জলপাইগুড়িতে একটি ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ককেও সঙ্গে নিয়ে নিয়েছিলেন। আসলে প্রশান্ত কিশোর তৃণমূল কংগ্রেসের ইমেজে বামপন্থী ছোঁয়া লাগিয়ে দিতে চান বলে মনে হয়। বিজেপি করছে চূড়ান্ত দক্ষিণপন্থী রাজনীতি। মোদী সরকার নিয়েছে ১৬ আনা দক্ষিণপন্থী অর্থনৈতিক সংস্কারের লাইন।
এ সবের বিরুদ্ধে লড়তে গেলে তৃণমূল কংগ্রেসকে একটু বামদিকে হেলাতে চান প্রশান্ত কিশোর। নির্বাচনী রণকৌশলের দিক থেকে এটা ১৬ আনা ঠিক। বিপরীতে বিজেপি বুঝছে ব্লক ও ওয়ার্ডস্তরে কিছু অভিজ্ঞ রাজনৈতিক কর্মী দরকার। বিজেপি এক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। শুধু ব্লক কেন, জেলা ও রাজ্যস্তরের ক্ষেত্রেও সেটা সত্যি।
তাই বিজেপি তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী থেকে নেতাদের সঙ্গে চলার টার্গেট করছে। শোভন চট্টোপাধ্যায় ফের তৃণমূলে ফিরতে পারেন শুনেই অরবিন্দ মেনন শোভনের বাড়ি চলে গিয়ে তাঁকে নিরস্ত করেন।
শুধু শোভন কেন, তৃণমূলের এমন অনেককেই ওরা টার্গেট করেছে। আগামী দিনে সেটা বোঝা যাবে। কিন্তু রেল, ব্যাঙ্ক-সহ দেশ বেচে দেওয়ার লাইনের বিরুদ্ধে মমতা-সোনিয়া-সীতারাম এক সুরে বলতে পারবেন। বিপরীতে বিজেপি নেতাদের ঢোঁক গিলতে হবে।
আগামী ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারের এক নম্বর পয়েন্টই হবে এই দেশ বেচে দেওয়ার সর্বনাশা লাইনের বিরোধিতা করা। সেদিক থেকে চিন্তা করলে বোঝা যায়, পিকের লাইন ঠিক, বিজেপির লাইন বেঠিক।
Be the first to comment