তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে NEET-JEE-র পরীক্ষা পিছোনোর দাবিতে ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে অবস্থান-বিক্ষোভ করে TMCP । মঞ্চ থেকে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “কোনও পড়ুয়ার কিছু হলে কেন্দ্রীয় সরকারকে লিখিত দিতে হবে তারা ওই পড়ুয়ার দায়িত্ব নেবে।”
NEET ও JEE সেপ্টেম্বরে হবে বলে ঘোষণা হয় কিছুদিন আগে। যা নিয়ে রীতিমতো বিক্ষোভে নেমেছে অবিজেপি রাজনৈতিক দলগুলি। পরীক্ষা পিছোনোর দাবিতে আজ অবস্থান-বিক্ষোভে বসে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। বিক্ষোভ মঞ্চে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ। কোর্টের কাজ কোর্ট করেছে। কোর্টকে সঠিক তথ্য দেওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের কাজ। যেটা তারা দেয়নি।
প্রতিদিন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কোরোনায় আক্রান্ত হচ্ছে ভারতে। এই পরিস্থিতিতেও অহংকারের কারণে, ঔদ্ধত্যের কারণে কেন্দ্রীয় সরকার পিছপা হচ্ছে না। মানুষ সরকারের জন্য নয়। সরকার মানুষের জন্য।
মঞ্চ থেকে তিনি সকলকে মাস্ক পরার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বার্তা দেন। বলেন, “অতি উৎসাহিত হয়ে কেউ নিয়ম ভেঙে ফেলবেন না । বেঁচে থাকলে রাজনীতি হবে ।”
NEET ও JEE না পিছোলে পডু়য়াদের পাশাপাশি বিপদে পড়বেন অভিভাবকরাও । এবিষয়ে অভিষেক বলেন, পড়ুয়ারা পরীক্ষা দিতে এলে তাঁদের সঙ্গে অভিভাবকরাও আসবেন। তাঁরাও আক্রান্ত হতে পারেন। এত মানুষের দায়িত্ব নেবে কে? আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁরা বাড়িতে গিয়ে আবার বহু মানুষকে সংক্রমিত করতে পারেন না জেনেই। এইসব কী সরকার ভেবেছে?”
পাশাপাশি পড়ুয়াদের বাস্তব সমস্যা তুলে ধরে অভিষেক বলেন, “ট্রেন চলছে না, বিহার, অসমে বন্যা পরিস্থিতি। কারও বাড়ি থেকে পরীক্ষাকেন্দ্র ৩০০ কিলোমিটার দূর। কারও ৫০০ কিলোমিটার। তাঁরা কীভাবে পরীক্ষা দেবে একবার ভেবে দেখেছেন? হয়তো হোটেলে থাকবে কেউ। সেখানে তাঁদের সুরক্ষা কে দেবে? আপনি দেশ গঠনের কথা বলছেন। চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ররা না থাকলে কী হবে। ঠিক কথা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে আগে মানুষের জীবন।
ডিজিটাল ইন্ডিয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি পরামর্শ দেন টেকনোলজিকে কাজে লাগিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা। অভিষেক বলেন, আজ এতদিন ডিজিটাল ভারত অভিযান চালিয়েছেন। আজ তা কোথায় গেল? ডিজিটাল টেকনোলজিকে কাজে লাগিয়ে সরকার পারছে না পরীক্ষা নিতে? ৩০ লাখ পরীক্ষার্থী মানে তাঁদের অভিভাবদের জীবনও বিপদের মুখে ফেলা। আপনারা একদিকে বলছেন, ছাত্র সমাজ , যুব সমাজ দেশের ভবিষ্যৎ। তাহলে তাঁদের জীবন বাঁচানোর দায়িত্ব আপনাদের নয়? আপনি ডিজিটাল টেকনোলজির মাধ্যমে পরীক্ষা নিন না, কে বারণ করেছে। অ্যামেরিকার এক বিশ্ববিদ্যালয় তো নিচ্ছে।
অভিষেক আরও বলেন, দেশের বর্তমান কোরোনা পরিস্থিতি তুলে ধরে অভিষেকের বক্তব্য, “লকডাউন আনলক হল। দেখুন দেশের কী পরিস্থিতি। ছ’মাস হয়ে গেল, কোরোনা পরিস্থিতি ভালো হওয়া তো দূর, আরও খারাপ হচ্ছে দেখুন। আপনি বললেন থালা বাজাতে, লোকে বাজাল। তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু আপনার কথা মানুষ শুনল, এখন তাদের কথা আপনি শুনছেন না।
যুব তৃণমূলের সভাপতি আরও বলেন, প্রায় ৭০ শতাংশ পড়ুয়া অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করেছেন। করবেন না কেন। পরীক্ষা হলে তো করতেই হবে। স্কুল খোলার পরিণাম আপনারা দেখেছেন। অন্য এক দেশে স্কুল খুলে কী হয়েছিল দেখেছেন নিশ্চয়ই। এখানে সেটা হলে কী হবে ভাবুন।
Be the first to comment