সংসদে নতুন কৃষি বিল পাশ করানোর আগেই বড় ধাক্কা খেল মোদী সরকার ৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কউর বাদল ৷ তিনি এনডিএ-র জোট শরিক শিরোমণি অকালি দল থেকে মন্ত্রী হয়েছিলেন ৷ নতুন তিনটি কৃষি বিল কৃষক বিরোধী, এই অভিযোগ তুলেই মোদি সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে পদত্যাগ করেছেন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী হরসিমরত৷ নতুন তিনটি কৃষি বিলের বিরোধিতায় পাঞ্জাবে ব্যাপক প্রতিবাদে নেমেছেন কৃষকরা ৷ তারই জেরে পদত্যাগ করলেন হরসিমরত৷ যদিও সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করবে শিরোমণি অকালি দল ৷
এদিন হরসিমরতের স্বামী এবং শিরোমণি অকালি দলের প্রধান সুখবীর বাদল জানিয়েছেন, তাঁদের দল কৃষক বিরোধী নীতির বিরোধিতায় এই পদক্ষেপ করেছে৷ তবে এনডিএ ছেড়ে তাঁরা বেরোচ্ছেন না৷ লোকসভায় কৃষি বিলের সমর্থনে ভোটাভুটির আগেই পদত্যাগ করেন হরসিমরত৷ যদিও যে ক্যাবিনেট বৈঠকে এই বিলগুলি নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তাতে উপস্থিত ছিলেন হরসিমরত৷ এর আগে প্রকাশ্যেও বিলগুলি সমর্থন করেছেন তিনি৷
চলতি বাদল অধিবেশনে কৃষিক্ষেত্রে তিনটি নতুন বিল পাশ করতে চলেছে কেন্দ্র৷ ইতিমধ্যেই এই বিলগুলি পাশ করাতে তিন অর্ডিন্যান্সে অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা৷ সেগুলি হল অত্যাবশ্যক পণ্য (সংশোধনী) অর্ডিন্যান্স, ফার্মার্স (এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রোটেকশন) এগ্রিমেন্ট অন প্রাইস অ্যাসিওরেন্স অ্যান্ড ফার্ম সার্ভিসেস অর্ডিন্যান্স ও ফার্মার্স প্রডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স (প্রমোশন অ্যান্ড ফ্যাসিলিটেশন) অর্ডিন্যান্স৷
মোদী সরকারের দাবি, এই তিনটি বিল পাশ হলে কৃষকদের ফসলের ন্যায্য দাম পেতে সাহায্য করবে ৷ জুনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী দফতর থেকে একটি নোটিসে জানানো হয়, এই তিন অর্ডিন্যান্সের ফলে কৃষকরা তাঁদের ফসলের উত্পাদন, বণ্টন ও দাম নির্ধারনে স্বাধীনতা পাবেন৷ বেসরকারি বা বিদেশি পুঁজিপতিদের হেনস্থা থেকে রেহাই মিলবে চাষিদের ৷ একই সঙ্গে কোল্ড স্টোরেজে বিনিয়োগ বাড়বে ও ফুড সাপ্লাই চেনে আধুনিকতা আসবে ৷
কিন্তু প্রতিবাদে সরব চাষিরা জানাচ্ছেন, এই তিন বিল পাশ হলে দেশের কৃষিব্যবস্থা কর্পোরেটদের কুক্ষিগত হয়ে যাবে৷ আর্থিক ভাবে বিপর্যয়ের মুখে পড়বে চাষিরা৷ বিল পাশ রুখতে দেশজুড়ে একত্রিত হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন একাধিক কৃষক সংগঠন৷ এই তিন বিলের প্রতিবাদে পাঞ্জাব, হরিয়ানার মতো কৃষি নির্ভর রাজ্যগুলিতে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে৷ উত্তর প্রদেশ সহ দেশের বাকি অংশেও ছড়াচ্ছে বিক্ষোভ৷ যদিও বিল পাশ করানোর বিষয়ে এখনও অনড় কেন্দ্র৷ এর মধ্যে গত অত্যাবশ্যক পণ্য (সংশোধনী) বিলটি লোকসভায় আলোচনার জন্য তোলা হলে সেটি ধ্বনি ভোটে পাশও হয়ে যায়৷
Be the first to comment