লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও প্রতিবাদ উড়িয়ে পাশ হয়ে গেল কৃষি বিল। তুমুল বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মধ্যেই ধ্বনি ভোটে পাশ হয় বিলটি। যদিও কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের দাবি এই বিল সম্পূর্ণ ভাবে কৃষক স্বার্থ বিরোধী।
রাজ্যসভায় আজ ‘কৃষিপণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন’ এবং ‘কৃষিপণ্যের দাম নিশ্চিত করতে কৃষকদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন চুক্তি’ সংক্রান্ত বিল পেশ হয়। কেন্দ্রীয় কৃষি উন্নয়ন, কৃষক কল্যাণ ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমার বিল পেশ করে। তিনি বলেন, কৃষকদের ফসলের ন্যায্য দাম পাওয়ার পথে এই বিল কোনও বাধা তৈরি করবে না।
কৃষি বিল পেশ করতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যসভা। বিলের তীব্র বিরোধিতা করেন বিরোধীরা। বিক্ষোভ দেখান। ওয়েলে নেমে আসেন। কৃষি বিল বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। ডেপুটি চেয়ারম্যান সবাইকে সিটে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু থামানো যায়নি বিরোধীদের। বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলতে থাকে।
রাজ্যসভায় তৃণমূল সদস্য ডেরেক ও’ব্রায়েন ওয়েলে নেমে আসেন। ডেপুটি চেয়ারম্যানকে হাউজ রুল বুক দেখান। ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করেন। পাশ থেকেই কোনও ব্যক্তি রুল বুক ছোড়েন ডেপুটি চেয়ারম্যানের উদ্দেশে। তুমুল শোরগোল চলে। আজ দিনটিকে পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম খারাপ দিন বলে সম্বোধন করেন ডেরেক। তিনি বলেন, ওঁরা সংসদের নিয়ম ভেঙেছেন। ইতিহাসে অন্যতম খারাপ দিন আজ।
কৃষি বিলের প্রথম থেকেই বিরোধিতা করেছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধীদলগুলি বারবার দাবি করেছেন, এই কৃষি বিল কৃষক বিরোধী। তীব্র প্রতিবাদ করেছেন তাঁরা। আন্দোলনকারী চাষি এবং বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, এই বিলে কৃষকদের স্বার্থ উপেক্ষা করে বড় ব্যবসায়ী এবং কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে একপাক্ষিক ফসলের দাম নির্ধারণের অধিকার দেওয়া হয়েছে।
শুধু বিরোধী দল নয় প্রভাব পড়ে মোদীর মন্ত্রীসভাতেও। প্রতিবাদে মোদীর মন্ত্রীসভা ছাড়েন পাঞ্জাবের শিরোমণি অকালি দলের নেত্রী হরসিমরত কউর বাদল। তাঁর অভিযোগ, কৃষক বিরোধী আইন আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও ওই বিলগুলি যে মন্ত্রিসভা বৈঠকে পাশ হয়েছিল, সেখানে উপস্থিত ছিলেন হরসিমরত। পরবর্তীতে দলেরই কৃষক-কর্মী সমর্থকদের চাপে সুর বদল করে শিরোমণি অকালি দল। বিক্ষোভ-প্রতিবাদের জেরে আজ মুলতুবি হয় রাজ্যসভা। তবে শেষ পর্যন্ত ধ্বনি ভোটে কৃষি বিল পাশ করিয়ে নেয় কেন্দ্র।
Be the first to comment