হাথরস মামলার তদন্তে আরও দশদিন সময় হাতে পেল বিশেষ তদন্তকারী দল বা স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন (SIT) টিম । এই মামলায় আজ একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল। তবে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশে তাদের আরও দশদিন সময় দেওয়া হল।
গতকাল তিন সদস্যের SIT ওই যুবতির গ্রামে যায়। যেখানে তার উপর হামলা হয়েছিল এবং যেখানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল, সেইসব জায়গা খতিয়ে দেখে। এই দলটির সঙ্গে একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞও ছিলেন।
গতকাল তদন্তকারী দলের তরফে জানানো হয়েছিল , আগামীকাল নাগাদ তদন্ত শেষ হবে। আশা করছি , আগামীকাল রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে পারব । যদি আমরা কোনও কারণে তদন্ত শেষ করতে না পারি, তবে আরও একদিন বা দু’দিন সময় নিতে পারি। এরপরই আজ তদন্তে আরও দশদিন সময় হাতে পেল তদন্তকারী দল।
হাথরসের ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে কম জলঘোলা হয়নি ৷ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে বিরোধীরা সরব হয়েছে ৷ তারমধ্যেই কয়েকদিন আগে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তরফে জানানো হয়, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি ৷ আর এরপর ফরেনসিক রিপোর্টেও একই কথা জানানো হয় ৷ বলা হয় , “যুবতিকে ধর্ষণ বা গণধর্ষণ করা হয়নি ।” আগ্রার ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে ওই যুবতির নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৷ তখনই ফরেনসিক দল জানায়, ধর্ষণ হয়নি তাঁর ৷ যদিও ঘটনার ১১ দিন পর নমুনা পরীক্ষা কতটা সঠিক, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
এর আগে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ দাবি করে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যুবতির ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি ৷ ঘাড়ে আঘাত পেয়ে তাঁর মৃত্যু হয় ৷ ফরেনসিক রিপোর্ট আসার পর পুলিশের বক্তব্য, ফরেনসিক রিপোর্টেও ধর্ষণের কোনও চিহ্ন নেই ৷ এর থেকে প্রমাণিত কিছু মানুষ জাত-পাতের ভিত্তিতে বিষয়টিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছে ৷ তবে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷
এদিকে, বিশেষজ্ঞদের মতামত ভিন্ন ৷ তাঁদের বক্তব্য, ঘটনার এগারো দিন কেটে যাওয়ার পর যুবতির নমুনা আগ্রার ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয় ৷ এতদিন বাদে স্বাভাবিকভাবেই কোনও প্রমাণ পাওয়া যেতে পারে না ৷
১৪ সেপ্টেম্বর মা ও দাদার সঙ্গে প্রতিদিনের মতো ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন যুবতি ৷ অভিযোগ, সেই সময় তাঁকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে টানতে টানতে পাশের একটি জমিতে নিয়ে যায় ও গণধর্ষণ করে চারজন৷ জিভ টেনে ছিঁড়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় ৷ তাঁর জিভে গভীর ক্ষত ছিল। JNMC-এ চিকিৎসা চলছিল যুবতির। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সোমবার দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেখান থেকে পরে AIIMS-এ নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, ওই যুবতির শিরদাঁড়ায় গুরুতর আঘাত ছিল । যার জন্য তিনি পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন। শ্বাসও নিতে পারছিলেন না যুবতি। অবশেষে ২৯ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় তাঁর ৷
Be the first to comment