কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা, সিবিআইয়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর অশ্বনী কুমার-এর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। মণিপুর ও নাগাল্যান্ডের রাজ্যপালের দায়িত্বও পালন করেছেন অশ্বনী। বুধবার রাতে শিমলার বাড়ি থেকে সিবিআইয়ের প্রাক্তন এই কর্তার দেহ উদ্ধার হয়। বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
শিমলার পুলিশ সুপার মোহিত চাওলার উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানাচ্ছে, সিবিআইয়ের প্রাক্তন ডিরেক্টর অশ্বনী কুমার আত্মহত্যা করেছেন। সূত্রের খবর, তিনি বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে মানসিক অবসাদে ছিলেন। গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। পুলিশ তাঁর ঘর থেকে ইংরেজিতে লেখা একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করেছে। পরিবারের লোকেরা নিশ্চিত করেন, হাতের লেখাটি অশ্বনী কুমারের।
সিবিআইয়ের প্রাক্তন কর্তার আত্মহত্যার খবর পেয়ে পুলিশ অফিসারদের একটি টিম তাঁর বাড়িতে যায়। শিমলার ইন্দিরা গান্ধী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে একজন ডাক্তারও গিয়েছিলেন।
হিমাচল প্রদেশের ভমিপুত্র অশ্বনী কুমার উঠে এসেছিলেন পাহাড়ি শহর থেকে। নিজের রাজ্য সম্পর্কে অত্যন্ত গর্বিত ছিলেন। তাঁর ডক্টরেট ডিগ্রিও হিমাচল প্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। হিমাচল প্রদেশ ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত এই আইপিএস অফিসার ৩৭ বছরের কর্মজীবনে রাজ্যের ডিজিপি হিসেবে কাজ করেছেন। দু-বছরের মেয়াদের জন্য সিবিআইয়ের ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগের আগে ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাজ্যের ডিজিপি ছিলেন। হিমাচলের প্রথম কোনও পুলিশ অফিসার হিসেবে তিনি গোয়েন্দা সংস্থায় যোগ দেন।
আরুষি তলওয়ার হত্যা মামলার তদন্তের সময় তিনি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দায়িত্ব নেন। আরুষি খুনের তদন্তের মাঝপথে তত্কালীন সিবিআই ডিরেক্টর বিজয় শংকরকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে সেসময় দায়িত্ব নেন অশ্বনী কুমার। তার পরেই সিবিআইয়ের নতুন টিম আরুষি হত্যা মামলার নতুন করে তদন্তে হাত দেয়।
সিবিআইয়ের প্রথম টিমের সঙ্গে দ্বিতীয় টিমের তদন্তে মিল পাওয়া যায়নি। প্রথম টিম আরুষি খুনের সঙ্গে তার মা-বাবার সম্পর্ক ছিল না বলে দাবি করেছিল। কিন্তু, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দ্বিতীয় টিম দাবি করে, আরুষিকে হেমরাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলেছিলেন তার মা-বাবা। তার জেরেই খুন।
সিবিআই আদালত ২০১৩ সালে এই মামলায় আরুষির মা-বাবাকে যাবজ্জীবন দেয়। কিন্তু, ২০১৭ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট আরুষির মা-বাবাকে খালাস করে দেয়। ২০১০ সালে অবসরগ্রহণের পর ২০১৩-য় তিনি নাগাল্যান্ডের রাজ্যপালের দায়িত্ব পান। স্বল্প সময়ে জন্য তিনি সামলেছেন মণিপুরের রাজ্যপালের দায়িত্বও। এদিকে, অশ্বনী কুমারের মতো একজন উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তার আত্মঘাতী হওযার ঘটনায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
Be the first to comment