কৃষি আইন প্রত্যাহার করো, নয়তো সরে যাওঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Spread the love

মেদিনীপুরের জনসভা থেকেই কৃষক বিল নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধ সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্যত চাঁচাছোলা ভাষায় মোদী সরকারকে আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেত্রী। গত কয়েকদিন ধরে কৃষক বিল নিয়ে দিল্লির পথে কৃষকরা। চলছে লাগাতার আন্দোলন, বিক্ষোভ। কার্যত স্তব্ধ দিল্লি।

এই অবস্থায় মেদিনীপুর থেকে কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, নবান্নের ধান হাতে নিয়ে মমতার শপথ কৃষক আন্দোলনের পাশে ‘ছিলাম, আছি, থাকব’।। একই সঙ্গে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে একহাত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষি আইন প্রত্যাহার কর, নয়তো সরে যাও।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজ বহু জায়গায় নবান্ন, ধান ছুঁয়ে আজকের দিনে কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে কৃষক বিলের প্রতিবাদে মঙ্গলবার বাংলায় তৃণমূল আন্দোলনে নামবে তৃণমূল। মঞ্চ থেকে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই রূপরেখাও তৈরি করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, কৃষিবিল বেআইনি বিল। কাল ব্লকে ব্লকে আন্দোলন হবে। কৃষকদের নিয়ে আন্দোলন হবে। বেচারাম মান্নারা এই আন্দোলন শুরু করবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

অন্যদিকে, মঙ্গলবার কৃষক বিলের প্রতিবাদে সারা ভারত বনধের ডাক দিয়েছেন সারা ভারত সভা। বনধকে সমর্থন জানিয়েছে কার্যত সমস্ত বিরোধী দলই। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বনধকে সমর্থন না জানালেও কালকের বনধকে সমর্থন জানাচ্ছি।

অন্যদিকে, বাংলা দখলে এসেছে বিজেপির পাঁচ কেন্দ্রীয় নেতা। সারা রাজ্য জুড়ে কাজ করছে তারা। তাদেরকে তীব্র কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বহিরাগত বলে আক্রমণ শানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বহিরাগতরা এসেছে, কোটি কোটি টাকা বিলোচ্ছে। সেই প্রলোভনে মানুষকে না পড়ার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, কোনওভাবে কিনতে পারবে না তৃণমূলকে। তৃণমূলের শক্তি তাদের কর্মীরা। সুতারাং মোটা টাকা দিয়ে তাদের কেনা সম্ভব নয় বলে দাবি তাঁর। তবে, প্রলোভন এলে বাড়ির মহিলাদের রুখে দাঁড়ানোর নির্দেশ নেত্রীর। শুধু তাই নয়, মঞ্চ থেকেই মমতার বার্তা, বহিরাগতদের আমরা বাংলা দখল করতে দেব না।

প্রসঙ্গত, ২১শের নির্বাচনকে পাখির চোখ করে জেলা সফর শুরু করছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর প্রথমে শুভেন্দুর শক্ত ঘাটি মেদিনীপুরে পা রাখলেন তৃণমূল নেত্রী। এ দিনের জনসভায় উপস্থিত পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সী, পূর্ণেন্দু বসু, মানস ভুঁইয়া, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং ছত্রধর মাহাতোও।

তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এদিনের সভায় দেখা যায়নি অধিকারী পরিবারের কোনও সদস্যকেই। পশ্চিম মেদিনীপুরে সভা হলেও পূর্বে নেতাদের যোগদানের কথা জানিয়েছিলেন। বিশেষ করে অধিকারী পরিবারের শুভেন্দু, শিশির ও দিব্যেন্দুদের। সেই কারনে সবার নজর রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকারী পরিবারের দিকে।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দুই লোকসভা কেন্দ্র তমলুক ও কাঁথির সাংসদ যথাক্রমে দিব্যেন্দু অধিকারী ও তাঁর বাবা শিশির অধিকারী। তবে সভার আগের দিন তমলুক লোকসভার সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী বিশেষ কাজে দিল্লী গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে কাঁথি লোকসভার সাংসদ শিশির অধিকারী পায়ে অস্ত্রোপচার হওয়ায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আর যাকে নিয়ে এতো জল্পনা সেই নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী কি করে সেটাই দেখার ছিল। কিন্তু জল্পনা সত্যি করে মমতার সভায় গেলেন না শুভেন্দু।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*