সমস্ত জল্পনার অবসান! তৃণমূল বিধায়ক পদে ইস্তফা দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আজ বিকেল চারটে নাগাদ বিধানসভায় গিয়ে ইস্তফা পেশ করলেন শুভেন্দু। তবে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকায় সচিবের কাছে ইস্তফা দেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়।
অধ্যক্ষকে ইমেল করে ইস্তফাপত্র পাঠালেন শুভেন্দু। যদিও বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, ‘শুভেন্দুর ইস্তফাপত্র গৃহীত হচ্ছে না। কারণ, ‘ইস্তফাপত্র গ্রহণের এক্তিয়ার নেই সচিবের।’
স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে শুভেন্দু লেখেন, আমার শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। এখানে আমি বিধানসভার সদস্য হিসেবে ইস্তফাপত্র জমা দিতে চাইছি। অনুগ্রহ করে এই পদত্যাগপত্র গ্রহণের সব পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। ইতি আপনার অনুগত, শুভেন্দু অধিকারী।
এদিকে শুভেন্দু বিধায়ক পদ ছাড়ার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, শুভেন্দু দলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলেন। দেখুক বিজেপিতে গিয়ে পান।
এদিন দুপুরে কলকাতায় আসেন শুভেন্দু। তিনি বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে যান। তবে অধ্যক্ষ বিধানসভায় না থাকায় বিধানসভার সচিবের কাছেই এদিন পদত্যাগ পত্র জমা দেন শুভেন্দু বলে সূত্রের খবর।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের টিকিটে কাঁথি দক্ষিণ বিধানসভা থেকে জয়লাভ করেন। ২০০৯ সালে তমলুক থেকে লোকসভা নির্বাচনে জয়যুক্ত হয়ে শিল্প দফতরের স্থায়ী কমিটির সদস্য হন।
২০১৪ সালেও নিজের আসনে জয়ী হন শুভেন্দু। ২০১৬ সালে পদত্যাগ করে নন্দীগ্রাম থেকে লড়াই করেন। সেখানেও জয়ী হন। পরিবহণ, সেচ দফতরের মত গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন তিনি।
যদিও গত ২৭ নভেম্বর রাজ্যের সমস্ত দফতর থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। সমস্ত সরকারি পদ থেকেও সরে গিয়েছেন। এবার বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দিতে চলেছেন বলে খবর। অন্যদিকে, দীর্ঘদিনের মায়া কাটিয়ে বিজেপিতে যোগদান এখন সময়ের অপেক্ষা। আগামী শনিবার বাংলায় আসছেন অমিত শাহ।
সূত্রের খবর, সকাল ১১টায় পশ্চিম মেদিনীপুরের হবিবপুরে সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরে পুজো দিতে যাবেন তিনি। কাছেই বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর মাসির বাড়ি পরিদর্শনেও যেতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর মেদিনীপুর স্পোর্টস কমপ্লেক্সে বিজেপির নির্বাচন কমিটির সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেবেন শাহ।
বৈঠকের পর মেদিনীপুর শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে কর্ণগড় মন্দিরে পুজো দিতে যেতে পারেন তিনি। ফেরার সময় এবারও আদিবাসী পরিবারের মধ্যাহ্নভোজ সারার কথা শাহ-র। এরপর সোজা মেদিনীপুর স্পোর্টস কমপ্লেক্সে কৃষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সেদিন একমঞ্চে দেখা যেতে পারে শুভেন্দুকে। এরই মধ্যে নন্দীগ্রামের বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দিতে পারেন তিনি। শুধু তিনিই নন, আরও বেশ কয়েকজন বিদ্রোহী তৃণমূল বিধায়ককেও শাহের মঞ্চে দেখা যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও শুভেন্দুকে নিয়ে জল্পনার শেষ নেই! অপর একটি সূত্র জানাচ্ছে, শুক্রবারই দিল্লি উড়ে যেতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে প্রথমে মোদীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন শুভেন্দু। দেখা হতে পারে অমিত শাহের সঙ্গেও। এরপরেই মেদিনীপুরেই আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন শুভেন্দু। এমনটাই সূত্রে জানা যাচ্ছে।
Be the first to comment