শুক্রবার শুভেন্দু সভার দিনেই ফের বিজেপিকে আক্রমণ করলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে চা খেয়ে কীভাবে বাংলার সংষ্কৃতিতে কালি লাগানো যায় তার চর্চা চলছে’ বলে নাম না করে দিলীপকে আক্রমণ পার্থর।
যাদের কোনও লক্ষ্য নেই’ নাম না করে দিলীপকে আক্রমণ করে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে চা খেয়ে খেয়ে ধ্বংস করো, কীভাবে বাংলাকে পিছিয়ে ফেলা যায়, কীভাবে বাংলার ঐতিহ্য-গরিমা-সংষ্কৃতিতে কালি লাগানো যায় তার চর্চা চলছে।’
তিনি আরও বলেন, একজন কেউ এগিয়ে এসে বলছে না যে, বাংলায় আরও উন্নয়ন কীভাবে সম্ভব। কেউ বলছেন না যে বাংলায় বেকারত্বের হার কমছে। চাকরী সুযোগ বাড়ছে। জাতীয় স্তরেও যেখানে ৪৫ বছরের ওপরেও বেকারত্বের হার চূড়ায়। সেখানে আমরা এখানে আমাদের সাধ্য মতো কর্ম সংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছি। ‘তাই কে প্রথম , কে দ্বিতীয় -এই লড়াই করবার আগে বাংলার মানুষকে ধ্বংস না করে বলা উচিত উন্নয়ন গর্জে উঠুক’ বলে জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। আর দোরগড়ায় দাড়িয়ে একের পর এক দল বদল, সভায়-সভায় শাসক-বিরোধীদের বাকযুদ্ধ লেগেই আছে। প্রত্যেকেই কম বেশি তোপ দাগছেন। অপরদিকে তার পাল্টা জবাবও দিচ্ছেন নেতা-মন্ত্রীরা। তবে এই অবধি আর ঠেকে নেই, বাকযুদ্ধ কখনও কখনও শালীনতা ছাড়ানোয় কিংবা নাম জড়ানোয় সোজা মামলা ঠুকে দিচ্ছে একে-অপরের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক শীর্ষ নের্তৃত্বরা। তবে শুভেন্দুর নন্দীগ্রামের সভার দিনেই ঠান্ডাভাবেই শুক্রবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপির শীর্ষ নের্তৃত্বের দিকে বাক্য-বাণ ছুড়লেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
যদিও এর আগেই শুভেন্দু উল্লেখ্য করেছেন বাংলার দুর্দশার কথা, বেকারত্বের কথা। প্রতিবছর এসএসসি সহ ২-৩ হাজার টাকার চাকরি আর থাকবে না, পড়তে হবে না অর্থকষ্টে বলেই দিয়েছেন তিনি। তাই ভরাডুবির আগে ফুটো নৌকায় যাতে জল না ঢোকে সেই চেষ্টা করছেন তৃণমূলের এই বর্ষীয়ান নেতা, বলে চাপানউতোর রাজনৈতিক মহলে।
পাশাপাশি এদিন রাজ্যের উন্নয়ন প্রসঙ্গে শাসক দলের কাজের হিসেব দিলেন। সেইসঙ্গে বিরোধীদের দিকে আক্রমণাত্মক হুঙ্কার দিতেই ছাড়লেন না পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই রাজনৈতিক তর্জা আরও জোরতার হয়ে উঠেছে। দলে একদিকে যেমন ভাঙ্গন চলছে, তেমনি অন্যদিকে দলের কাজের ফিরিস্তি দিয়ে বাংলার মানুষকে আটকে রাখার প্রচেষ্টাও চলছে। এই বিষয়ে এবার মুখ খুললেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দিলের বাংলায় তৃণমূলের রাজত্বে কাজের হিসেব।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর নেতৃত্ব বাংলায় উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পেই অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু কেউ সেই সকল উন্নতির কথা বলছেন না। ঐতিহাসিক সাফল্য এনেছে বাংলায় রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। কিন্তু সেইসব কথা কেউই বলছেন না’।
এরপর কেন্দ্রকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘সকলের নজরে আসতে এবং খবরের শিরোনামে থাকতে বিরোধীরা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে যাছে। হিসাবে দেখা গেছে, গোটা দেশের নিরিখে বেকারত্বের সংখ্যা বাংলায় অনেক কমেছে’।
এদিন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘রাজ্যে ধ্বংসের রাজনীতি চলছে। বাংলাকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। যাঁরা দল বদলাচ্ছেন, তাঁদের কোনও অ্যাজেন্ডা নেই।’ তাঁর দাবি, ‘দেশের নিরিখে বাংলায় বেকারত্বের সংখ্যা কমেছে। মমতার নেতৃত্বে বাংলার উন্নয়ন অব্যাহত। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে ঐতিহাসিক সাফল্য এসেছে।’
তাঁর অভিযোগ, ‘খবরে ভেসে থাকতে বিরোধীরা চক্রান্ত করছে। চ্যালেঞ্জ নিয়ে সর্বত্র উন্নয়ন চলছে। উন্নয়নের কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কেউ এসে উন্নয়নের কথা বলছেন না। নিজেদের প্রতিষ্ঠার জন্য সংবিধানকে আঘাত করছে। বাইরে থেকে এসে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে।’
Be the first to comment