দলের অন্যতম বর্ষীয়ান সাংসদ। দীর্ঘদিন ধরে নেত্রী মমতার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছেন। সেই দীর্ঘদিনের সঙ্গীকেই কার্যত এভাবে কড়া বার্তা তৃণমূল সুপ্রিমোর! দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে শিশির অধিকারীকে সরিয়ে দেওয়া হল। আর সেই খবর শুনলেন কলকাতার একটি হাসপাতালে শুয়ে। আর তা জেনে শিশির অধিকারীর প্রতিক্রিয়া, ‘নো অ্যাকশন- নো রিঅ্যাকশন !
অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে গিয়েছেন ছেলে শুভেন্দু। যদিও বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে একাধিকবার তৃণমূল শুভেন্দুর সঙ্গে আলোচনা সেরেছিল। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। বিজেপিতে যোগ দিয়েছে ছেলে। শুধু শুভেন্দু একা নয়, বিজেপিতে গিয়েছে আরও এক ছেলে। যদিও এখনও তৃণমূলেই থেকে গিয়েছেন শিশির এবং দিব্যেন্দু অধিকারী!
তাঁদের উপরেও যে খাঁড়া নেমে আসবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল৷ কয়েকদিন আগেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অধিকারী পরিবারের এই দুই সদস্যকে ঘুরিয়ে উপসর্গহীন বেইমান বলে কটাক্ষ করেছিলেন ৷
এরপর শিশির-দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ ছিল কার্যত সময়ের অপেক্ষা ৷ অবশেষে মঙ্গলবার দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে শিশিরকে সরিয়ে কঠিন বার্তাটা শিশিরকে দিয়েই দেওয়া হল ৷ এই সিদ্ধান্ত সরকারিভাবে হলেও এর পিছনে যে গভীর একটা রাজনৈতিক কারণ রয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
তবে হঠাত করেই যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা হয়তো কল্পনা করতে পারেননি শিশিরবাবুও। আর তাই এই খবর শোনার পর হাসপাতালে বেডে শুয়ে কিছুটা হেসেছেন শিশিরবাবু।
এরপর জানিয়েছেন, ‘চোখের অপারেশন করাতে এসেছি ৷ আমার কোনও রিঅ্যাকশন নেই৷ নো অ্যাকশন, নো রিঅ্যাকশন ৷ সবাই সব জানে৷ এই বয়সে আমার কিছু বলা উচিত হবে না ৷ আইনি না বেআইনি পদক্ষেপ, আমি কিছুই বলছি না৷’ তবে এই সিদ্ধান্তে যে কিছুটা হলেও বর্ষীয়ান এই সাংসদ কষ্ট পেয়েছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
তবে এই প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, শিশিরদা বর্ষীয়ান লোক। বয়সের কারণে তাঁর পক্ষে কাজ করাটা সমস্যা হচ্ছে। আবার এও কুণাল বলেছেন যে, শুভেন্দু এবং সৌমেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদানের পরেও শিশিরদার কোনও কড়া প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷ যেটা তৃণমূলকে দুঃখ দিয়েছে ৷
যদিও তার সঙ্গে এই প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের কোনও সম্পর্ক নেই৷’ কুণালের এহেন বক্তব্যে কার্যত স্পষ্ট এই সিদ্ধান্ত সরকারি হলেও রাজনৈতিক সম্পর্কও রয়েছে। অন্যদিকে, ডিসেম্বরের শেষের দিকে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন যে তাঁর ঘরেতেও পদ্ম ফুটবে। আর ঠিক তার পরের দিনই বিজেপি–তে যোগ দেন তাঁর ভাই সৌমেন্দু।
এবার কি শিশির অধিকারীও যোগ দেবেন বিজেপি শিবিরে? তা নিয়ে জোর জল্পনা রাজনৈতিক মহলে ৷ সেই জল্পনা বাড়িয়ে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতা মুকুল রায় বললেন, ‘উনি তো এসেছেন। ওঁর ছেলে এসেছে, আবার কী! শিশিরের আসা সময়ের অপেক্ষা।
Be the first to comment